আর্কাডিয়ায় বাড়িতে অনুপ্রবেশকারীর গুলিতে ৬১ বছর বয়সী পিতার মৃত্যু; সন্দেহভাজন পলাতক
নারী ফুটবল দল পাচ্ছেন একুশে পদক
দিনভর বাফুফে ভবনে সংবাদকর্মীদের ভিড়। এক সপ্তাহ ধরে নারী ফুটবলাররা ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে তার অপসারণ চাইছে। পিটারের কাছে অনুশীলন করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। কোচের ভুল-ভ্রান্তি নিয়ে নানা অভিযোগ। কোচ সিনিয়রদের সম্মান দিচ্ছেন না। কোচও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ৭ ফুটবলার থাকলে তিনিও থাকবেন না। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বাফুফে ভবন ছিল থমথমে।
প্রতিদিনের মতো গতকালও বাফুফে ভবন আঙ্গিনায় সংবাদকর্মীদের ভিড় ছিল। সন্ধ্যা নাগাদ খবর আসে সরকার নারী ফুটবল দলকে একুশে পদক দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কোচ দ্বন্দ্বে যেসব খেলোয়াড় মন খারাপ করে ছিলেন তারা মুহূর্তে আনন্দে ভাসিয়ে দিয়েছেন নিজেদেরকে। সানজিদা খাতুন যেন উল্লাসে মেতে উঠেছেন। তারা বুঝতেই পারছেন না একুশে পদকের সম্মান কতো বড়। তবে এতটুকু বুঝতে পারছেন দেশের অনেক বড় পুরস্কার পেয়েছেন তারা। ফোনে কথা বলতে গিয়ে সানজিদা অকপটে বলছিলেন, 'দুঃখের দিনে সবার মুখে হাসি ফুটেছে।'
ফোনে কথা বলার সময় বুঝা যাচ্ছিল সানজিদার আশপাশে উল্লাসের আওয়াজ। নারী কণ্ঠে আনন্দের উচ্ছ্বাস। রাষ্ট্র একুশে পদক দিয়েছে। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ২০২২ সালে এবং ২০২৪ সালে পর পর দুই সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বাংলাদেশের নারী ফুটবল ইতিহাস খুব বড় নয়। তার পরও খুব কম সময়ের মধ্যে দুই বার সাফ জয় করা বিরাট ব্যাপার। দুই বারই কোনো ম্যাচ হারেনি নারী ফুটবল দল। উপমহাদেশের ফুটবলে এমন শ্রেষ্ঠত্ব দেখানো চাট্টেখানি কথা নয়।
সানজিদা বলছিলেন, 'আমাদের মন ভালো ছিল না। খেলার মধ্যে নেই। আর এমন সময় একুশে পদক আমাদের মন ভালো করে দিয়েছে। আমাদের ২৩ জন এই পুরস্কার পেয়েছেন। আমরা সৌভাগ্যবান।' একশে পদক কি সানজিদা সেটা বুঝতে পারেননি। এই পদক পেলে কি হয়। ভাষা আন্দোলনে শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকার একুশে পদক চালু করে। একুশে পদক হচ্ছে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেয় সরকার। এটা শুধুই একটি পুরস্কার নয়, সম্মান। সানজিদা বলছেন, 'অনেকে অনেক ভালো কাজ করেও পুরস্কার পায় না। আমরা ভাগ্যবান, পেয়েছি। বাংলাদেশের নারী ফুটবলের জন্য এটা অনেক বড় ইতিহাস বলব।'
একুশে পদক সম্পর্কে আমি আরও কিছু জানতে চাই।' সানজিদা যতটুকুই জানুক, এটা যে অনেক বড় সম্মানের সেটি অনুভব করতে পারছেন সানজিদারা।
নারী ফুটবল দল একুশে পদক পাওয়ার খবরে খুশি হয়েছেন সাবেক তারকা অ্যাথলেট ফিরোজা খাতুন। ফিরোজা খাতুন বলেন, 'নারী ফুটবলারদের জন্য এটা অনেক বড় প্রাপ্তি। একজন অ্যাথলেট শুধু খেলেই যাবে, কিন্তু কোনো স্বীকৃতি যদি না পায় তাহলে অপূর্ণতা থেকে যায়। আমাদের মেয়েরা ফুটবল খেলে দেশকে সাফল্য এনে দিয়েছেন। এখন একুশে পদক পেলেন, এটা মজার ব্যাপার। শুধু আমারই খুশি না, দেশের সব নারীদের জন্য খুশির খবর এবং এ সম্মান অন্যান্য নারী ক্রীড়াবিদকে উৎসাহিত করবে।'
কোনো ক্রীড়া দলের এটাই প্রথম একুশে পদক হলেও এর আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পেয়েছিল স্বাধীনতা পুরস্কার। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য চেষ্টা করেছিল কিন্তু তারা আজও সেটি পায়নি। তবে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অনেক সদস্য জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন কাজী সালাহউদ্দিন, গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ, ক্রিকেটার রকিবুল হাসান।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন