লস এঞ্জেলেসে ফের শক্তিশালী বাতাস, সতর্ক অবস্থানে দমকল বাহিনী
প্রবাসী দ্বৈত নাগরিকদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বাধা দূর করার দাবি
প্রবাসী দ্বৈত নাগরিকদের সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বাধা দূর করার দাবি জানিয়েছে নিউইর্য়ক বিএনপি। নেতৃবৃন্দ দাবি জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বৈত নাগরিকদের এমপি পদ প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বাতিল ও সংশোধন করতে হবে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) নিউইয়র্কে বিএনপির এক মতবিনিময় সমাবেশে এ দাবি জানান।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। ইততিমধ্যে এসব কমিশন কাজও শুরু করেছে। এই কমিশনের কাছে আমাদের দাবি দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
নিউইয়র্ক মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিএনপি'র এ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ,সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য ও নিউইর্য়ক স্টেট সিনেটর সাবেক প্রার্থী গিয়াস আহমেদ।
আয়োজক সংগঠন ‘স্টেট বিএনপির সভাপতি মাওলানা অলিঊল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি সাঈদুর রহমান সাঈদের পরিচালনায় এতে অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এডভোকেট জামাল আহমেদ জনি, কোষাধ্যক্ষ জসীম ভূইয়া, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি আলহাজ্ব বাবরউদ্দিন, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা এম এ বাতিন, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জসীমউদ্দিন (ভিপি), আনোয়ার হোসেন, আরিফুর রহমান, সৈয়দা মাহমুদা শিরিন প্রমুখ।
ফজলুল হক মিলন সাম্প্রতিক স্বৈরাচার উৎখাতের আন্দোলনে প্রবাসীদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন দিতে হবে। এটা সময়ের দাবি। পতিত স্বৈরাচারের সমর্থকেরা বিভিন্নভাবে মিথ্যাচার করছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের অলীক অভিযোগ করছে।
গিয়াস আহমেদ বলেন , বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পারলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না কেন? যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের টাকায় দেশ এগিয়ে যায়, তারা কেন পিছিয়ে থাকবেন? আমেরিকাসহ বিশ্বের অনেক দেশ আছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি ছাড়া অন্য সব পদের নির্বাচনে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা সত্ত্বেও যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন ও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। তাহলে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে এমন ‘অহেতুক’ প্রতিবন্ধকতা থাকবে কেন?
গিয়াস আহমেদ বলেন, প্রবাসীদের থেকে ১০% সংসদ সদস্যসহ প্রশাসনে পদ-পদবী সংরক্ষিত রাখতে হবে। প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্তি ছাড়া বাংলাদেশে কার্যকর সংষ্কার সম্ভব নয়। কারণ বাংলাদেশী যারা আজীবন স্বৈরাচারের অনিয়মের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন তাদের মাধ্যমে তা সম্ভব নয়। প্রবাসীদের চোখে যে অনিয়ম ধরা পড়বে তা তাদের পক্ষে ধরা পড়বে না। প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘ দিনের দাবি দ্বৈত নাগরিকদের জাতীয় সংসদসহ প্রশাসনে নিয়োগের বাধা দূর করতে হবে।
গিয়াস বলেন, ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন। গণতন্ত্র প্রত্যাশী মানুষের মধ্যে বিবাদ-বিভক্তির জঘন্য অপচেষ্টা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
মার্কিন মূলধারার অন্যতম রাজনীতিক বিএনপির নেতা গিয়াস আহমেদ আরো বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যুক্তরাষ্ট্র পুলিশে কর্মরত প্রবাসীদের অভিজ্ঞতাকে ব্যবহারের একটি পদক্ষেপ নেয়া দরকার। একইভাবে প্রশাসনেও প্রবাসীদের সম্পৃক্ততার কথা ভাবতে পারেন সংস্কারের দায়িত্বে নিয়োজিতরা। গিয়াস আহমেদ নিজেও আমেরিকার নিউ ইয়র্ক স্টেটে রিপাবলিক পার্টি থেকে নমিনেশন পেয়ে সিনেটর হিসেবে নির্বাচন করেছেন। তাকে কোনো প্রশ্ন করা হয়নি বা আমেরাকান সংবিধানে দ্বৈত নাগরিকের কোনো প্রশ্ন নেই। অনেক আমেরিকানই ইজরাইলসহ ইউরোপের অনেক দেশে নির্বাচন করে থাকেন। আবার অনেক বিদেশি আমেরিকার নাগরিক হয়ে আমেরিকায় কংগ্রেসে নির্বাচন করে থাকেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের পক্ষ থেকে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন গিয়াস আহমেদ। এগুলো হলো-জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ভোটার আইডি কার্ড দেওয়া, প্রবাসীদের যার যার দেশে অবস্থান করে অনলাইনে বাংলাদেশে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা, জাতীয় সংসদে প্রবাসীদের আসন বরাদ্দ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্ব, দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ, বিদেশে অনিয়মিত বাংলাদেশিদের বৈধতার জন্য ঢাকা থেকে সরকারি উদ্যোগ এবং অভিবাসন ব্যয় কমানোসহ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিটের মূল্য হ্রাস করা।এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন