আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ওজতুর্ককে লুইজিয়ানা থেকে ভারমন্টে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ মার্কিন বিচারকের
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি শিক্ষার্থী রুমেইসা ওজতুর্ককে লুইজিয়ানা থেকে ভারমন্টে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বর্তমানে অভিবাসন হেফাজতে রয়েছেন এবং ১ মে’র মধ্যে তাকে ভারমন্টে স্থানান্তর করতে বলা হয়েছে, যেখানে তার জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
বিচারক উইলিয়াম সেশনস III রায়ে বলেন, “ওজতুর্কের গ্রেফতার ও আটক হওয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রশ্ন উঠেছে, যা এই আদালতে পূর্ণাঙ্গ বিচার পাওয়ার দাবিদার।”
এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি বড় ধাক্কা, যারা শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করে লুইজিয়ানার মতো দূরবর্তী স্থানে স্থানান্তরের মাধ্যমে বিচারপ্রক্রিয়া জটিল করে তুলছিল।
তুরস্কের নাগরিক ওজতুর্ক গত মাসে ম্যাসাচুসেটসের সামারভিল শহরের বাসার কাছ থেকে মুখোশ পরা ফেডারেল এজেন্টদের দ্বারা আটক হন। এরপর তাকে নিউ হ্যাম্পশায়ার, ভারমন্ট ঘুরিয়ে অবশেষে লুইজিয়ানার বেসিল শহরের ICE ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হয়।
তার আইনজীবীদের মতে, এই পুরো প্রক্রিয়ায় ওজতুর্ক তার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি এবং কোথায় আছেন সেটাও জানতে পারেননি।
ট্রাম্প প্রশাসন ওজতুর্ককে সন্ত্রাসবাদে সহানুভূতি দেখানোর অভিযোগ এনেছে। কিন্তু আদালতে প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। অভিযোগের ভিত্তি হিসেবে শুধু একটি Op-Ed (মতামত নিবন্ধ) উল্লেখ করা হয়েছে, যা তিনি এবং আরও কিছু শিক্ষার্থী লিখেছিলেন, যেখানে টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে অবস্থানের সমালোচনা করা হয়েছিল।
বিচারক সেশনস বলেন, “তিনি প্রথম সংশোধনী অধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ জমা দিয়েছেন এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পাল্টা প্রমাণ দেওয়া হয়নি।”
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার মন্ত্রণালয় দাবি করেছিল, এই মামলা লুইজিয়ানাতে স্থানান্তর করা উচিত, কারণ অভিবাসন আদালতের এখতিয়ার রয়েছে। তবে বিচারক সেশনস রায় দেন, যেহেতু ভারমন্ট ছিল তার শেষ হেফাজতের স্থান, তাই এখানেই মামলার বিচার চলবে।
ওজতুর্কের আইনজীবীরা তার গ্রেফতারকে বেআইনি ঘোষণা করার জন্য হ্যাবিয়াস করপাস আবেদন দায়ের করেছিলেন এবং জামিনে মুক্তি অথবা তাকে ভারমন্টে ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন করেন।
ACLU ম্যাসাচুসেটস-এর আইন পরিচালক জেসি রসম্যান বলেন, “এই রায়ে আদালত সঠিকভাবে স্বীকার করেছে যে রুমেইসা ওজতুর্কের মামলা ভারমন্টেই হওয়া উচিত — তার বন্ধু, সমাজ এবং আইনজীবীদের কাছাকাছি। একই সঙ্গে আদালত এটা স্পষ্ট করেছে যে বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা যাবে না।”
এই রায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন