সফল হলো বছরের সেরা আকর্ষণ জকমকে বাংলাদেশ মেলা – ২০১৫
গত ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখ শনিবার ও রবিবারে (লেবার ডে উইকেন্ড) লস এঞ্জেলেসে বাংলাদেশ মেলা হয়ে গেলো। বছরের সেরা আকর্ষণ, সর্ববৃহৎ মেলা “বাংলাদেশ মেলা-২০১৫”। অনুষ্ঠানের স্থান হলো লিটিল বাংলাদেশের শ্যাটো রিক্রিয়েশন সেন্টার। বাংলাদেশ মেলা কমিটি আয়োজন করে থাকে এই মেলার। সাথে ছিল একঝাক দেশী-বিদেশী শিল্পীদের পরিবেশনায় মন মাতানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যা এ অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। বাংলাদেশ ও ভারতের জনপ্রিয় ও স্বনামধন্য এতে অংশ নেন। এবারের আয়োজনে ছিলেন জনপ্রিয় ব্যান্ড দল মাইলস ,নচিকেতা, পার্থ বড়ুয়া। আমন্ত্রিত শিল্পীগণ ছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেন স্থানীয় সংগঠন ও শিল্পীগন।
মেলার ১ম দিনে অনুষ্ঠান শুরু হয় বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গিতের মাধ্যমে। এদিন প্রথমে সঙ্গিত পরিবেশনা করেন স্থানীয় গুণী শিল্পীগন । তার পর শুরু হয় সেই মাহেন্দ্রক্ষন । শিল্পী বাংলাদেশের সোলস এর লিড ভোকালিস্ট জনপ্রিয় শিল্পী পার্থ বড়ুয়া ও ভারতের দীর্ঘদিনের ব্যাপক জনপ্রিয় শিল্পী নচিকেতার সুর মূর্ছনা । তাদের গানে তালে সবাই বাংলাদেশে চলে গিয়েছিল কিছু সময়ের জন্য। ফিরে গিয়েছিল যে যার অতীতে।
২য় দিনের অনুষ্ঠানও শুরু হয় স্থানীয় শিল্পীদের গান দিয়ে। আসলে স্থানীয় শিল্পীরা সবসময় লস এঞ্জেলেসের যে কোন অনুষ্ঠানে অনাবদ্য ভুমিকা রাখেন। মঞ্চে পরিবেশনা করতে আসেন এস আই সুমন, প্রীয়দর্শিনি রায় চৌধুরী ও মেলার প্রধান আকর্ষন বাংলাদেশের তরুন সমাজের প্রানের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল মাইলস । তাদের পরিবেশনায় আকাশ বাতাশ ভরে ওঠে। নেচে ওঠে দর্শকের হৃদয়। সাধারনত রাত ১০টার পর কোন অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যায়। কিন্তু মাইলসের গানের সুরেলা তান্ডবে রাত ১১টা অবধি অনুষ্ঠান চলেছে। অন্যদিকে রাত নয়টা পর্যন্ত টিকেটের জন্য লোকজন লাইন ধরে ছিলও। আগত নারী ও যুবক গন তালে তালে মঞ্চের সামনে গিয়ে নাচতে শুরু করেন।
এ মেলায় অন্যতম আকর্ষণ ছিল র্যাফেল ড্র । বিজয়ীদের জন্য পুরস্কারের বাবস্থা ছিল । যেমন, টিভি, ল্যাপটপ ও গ্যালাক্সি ট্যাব।
পুরো অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেছেন লস এঞ্জেলেস’র জনপ্রিয় উপস্থাপিকা সাজিয়া হক মিমি এবং সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব আশরাফ আহমেদ মিলন ।
মেলায় লস এঞ্জেলেস বাসীর ঈদের কেনাকাটা অনেকাংশে করা হয়েছে। কারন এখানে ছিল বিভিন্ন রকম কাপড়-চোপড়ের স্টল, শাড়ি,
স্যালওয়ার কামিজ সহ পোষাকের স্টল, অলংকারের স্টল, খাবারের সটল ,ঘর সাজানোর জিনিসের দোকান সহ নান রকমের পন্যের পসরা । আর আড্ডা দেয়ার জন্য ছিল চা , ফুচকার দোকান । ভাবিরাও ব্যাপক কেনা কাটা করেন। সেই সাথে ছিল ক্যান্সার আক্রান্ত বাংলাদেশের শিল্পী স্বীকৃতির চিকিৎসার জন্য সাহায্য তহবিল সংগ্রহের কাজ। বাংলাদেশ মেলার প্রবেশ মূল্য প্রতিদিন ৫ ডলার করে নেয়া হয়।
মেলার গ্রান্ড স্পন্সর ছিল “তরঙ্গ অব ক্যালিফোর্নীয়া”, মিডিয়া পার্টনার অনলাইন নিউজ পোর্টাল “এলএ বাংলাটাইমস”। এবারের বাংলাদেশ মেলায় লস এঞ্জেলেস বাংলাদেশী কমিউনিটিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বেশ কিছু এ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। কম্যিউনিটির উন্নয়নে বিশেষ ভুমিকা রাখার জন্য বিশেষ স্বীকৃতি সম্মাননা
দেওয়া হয় তরঙ্গ অব ক্যালীফোর্নিয়ার সাধারন সম্পাদক, কমিউনিটির শ্রদ্ধেয় জনাব মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরীকে । গত দীর্ঘ দুই দশক ধরে লস এঞ্জেলেসে সাংস্কৃতিক অবদানের জন্য জনাব সিদ্দিকুর রহমানকে সম্মাননা দেয়া হয়। আরও কমিউনিটিতে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখার জন্য সম্মাননা দেওয়া হয় জনাব ডঃ মাহবুব খান, জনাব আশরাফ আহমেদ মিলন, জনাব সাইদুল হক সেন্টু, জনাব রফিকুল ইসলাম, জনাব নজরুলআলম, জনাব সরওয়ার জাহান খান, আশরাফুল আলম হেলাল, এবং সুমনকে।
কমিউনিটির বিভিন্ন সংবাদ দেশ ও বিদেশে উজ্জ্বলতর ভাবে সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরের জন্য অনলাইন নিউজ পোর্টাল “এল এ বাংলা ডট কম” এর প্রতিষ্ঠাতা ও সত্বাধীকারি জনাব আব্দুস সামাদকে বেষ্ট মিডিয়া হিসেবে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। তাকে ক্রেস্ট হাতে তুলে দেন বাফলার সাবেক প্রেসিডেন্ট জনাব সিপার চৌধুরী।
অপরদিকে বাংলাদেশ মেলার মত সফল আয়োজন করের জন্য লস এঞ্জেলেসে বসবাস রত সাবেক সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সংগঠন BAVOA এর পক্ষ থেকে মেজর(অব) এনামুল হামিদ মেজর(অব) সাইদ কুতুবী, লেঃ(অব) জিয়া ইসলাম বাংলাদেশ মেলার কমিটির সকল আয়জকদের মঞ্চে ডেকে ক্রেস্ট প্রদান করেন। এছাড়া বাংলাদেশ মেলার পক্ষ থেকে আয়োজনে সংশ্লিষ্ট সকলকে একটি করে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে সবাই গুন গুনিয়ে গান গাইতে গাইতে বাড়ি ফেরেন। ছাপ পরে থাকে সুখময় অনুষ্ঠানের সৃতি। যা দর্শকদের আবার কবে হবে বাংলাদেশ মেলা সে খোজ নিতে বাধ্য করবে।
শেয়ার করুন