লস এঞ্জেলেসের ভাবীদের বৈশাখী উৎসব
মহা ধুমধামে বাংলাদেশে পালিত হল পহেলা বৈশাখ। প্রবাসীরা কেন পিছিয়ে থাকবে ? তাই তো গত ১৮ই এপ্রিল ২০১৫ তারিখ শনিবারে এলমন্টে স্থানীয় ব্যবসায়ি জনাব সেলিম চৌধুরীর বাসস্থানে কমিউনিটির কিছু উদ্যমী ভাবীদের উদ্যোগে আয়োজিত হয়েগেলো বৈশাখী উৎসব। দুপুর ২টা থেকে রাত ০৮টা পর্যন্ত এ অনুষ্ঠান হয়। “এসো হে বৈশাখ” গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুর দিকে মেজর সাইফ কুতুবী বৈশাখী উৎসব পালনের উপর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এ উপলক্ষে এলাকা টা সেজেছিল অপরূপ সাঁজে। গ্রামবাংলার যত ঐতিহ্য আছে অধিকাংশ উপকরনই সেখানে উপস্থিত ছিল। বলতে গেলে এক অন্যরকম আয়োজন।
অনুষ্ঠানের প্রবেশের গেট মনোরম ভাবে সাজানো হয় গ্রামের চাল ঝাড়ার কুলা দিয়ে। পথ জুড়ে আঁকানো হয় বাহারি আলপনা। অনুষ্ঠানের ভিতরে ছিল আরও চমক। উক্ত বৈশাখী উৎসবে আয়োজক ভাবীরা দেশীয় ২০ থেকে ২৫ ধরনের পিঠাপুলি ও ভর্তা পরিবেশন করেন। সাথে ছিল আরও অনেক আয়োজন। অনুষ্ঠানস্থলটিকে উপস্থাপন করা হয় বাংলাদেশের একটি গেরস্থ বাড়ি হিসেবে। গ্রামীণ বাড়িতে যা যা থাকে তার সব ছিল সেখানে। সেখানে ছিল কুটির ঘর, ঢেঁকী , পুকুর, গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগী দিয়ে সাজানো গ্রাম্য পরিবেশ। বাচ্চাদের জন্য ছিল দোলনার বাবস্থা। অবাক করার মত একটি জিনিস সেখানে ছিল , তা হল “পালকী” । সে পালকীতে করে বর কনে সাজিয়ে বিয়ের শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়। গায় সবাই বিয়ের গান। সে এক অন্যরকম পরিবেশ।
এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীরা গান, কবিতা, নাচ সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আইটেম পরিবেশনা করেন।বাশি পুতুল,বাতাশা,একতারা , নৌকা কি নেই ? সব ঐতিহ্যবাহী বাঙ্গালী সামগ্রী আনা হয় সেখানে। পাওয়া যায় ঝাল মুড়ি ।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী নারীরা সেজেছিল বাঙ্গালী পোশাকে। আর পুরুষরা সাঁজেন কৃষক। অনেকে লুঙ্গি-গামছা ও পাঞ্জাবী পরিধান করেন। কেউ কেউ মাথায় কৃষকের মত মাথাল পরেন মাথায় । অনুষ্ঠানটি দেখার জন্য প্রচুর লোক সমাগম হয়। সেই সাথে বেশ কিছু বিদেশী অতিথিও ছিলেন ।সবাই অনুষ্ঠানটি খুব উপভোগ করেন । শেষের দিকে রাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করেন বিশিষ্ট বাবসায়ি ও ঢাকা হোমস এর কর্ণধার জনাব বেলায়েত হোসেন । তিনি এমন একটি সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। স্টেজে ভাবীদের দের দেকে সম্মান জানানো হয়। সব মিলিয়ে এটা ছিল এক খন্ড বাংলাদেশ উপভোগ করার মত আনন্দ।
শেয়ার করুন