লস এঞ্জেলেসের প্রবাসী বাংগালীকে জানাই বসন্তের শুভেচ্ছা
রোদ্রৌজ্জ্বল সকাল। গাছে গাছে কচি পাতার সমারোহ। আম্রবনে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। কোকিলের কুহু ডাক। উত্তরীয় হাওয়ায় বদলে দক্ষিণের সমীরণ। ঝরা পাতায় শুকনো নূপুরের নিক্কন। শিমুল পলাশের ডালে ডালে আগুন রঙের খেলা। প্রকৃতির এতো সব আয়োজন দেখে বুঝতে বাকি থাকেনা ‘আজ বসন্ত’।খ্যাতিমান কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাইতো বলেছেন, ‘ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত।’আবহমান বাংলার ঋতু বৈচিত্র্যের উল্লেখযোগ্য ঋতু বসন্ত। তাই এ ঋতুকে বলা হয় ঋতুরাজ। বঙ্গাব্দের শেষ দু’মাস ফাল্গুন ও চৈত্র মিলিয়ে বসন্ত ঋতু। বাংলার প্রকৃতি, আমাদের ভাষা, সমাজ, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের বড় স্থানদখল করে আছে বসন্ত। বসন্ত মিলনের ঋতু, আবার বিরহেরও ঋতু। শীতের জবুথবু প্রকৃতির অবসান ঘটিয়ে দক্ষিণ সমীরণের প্রবাহ শুরু হয় বসন্তে, এর সাথে দোলায়িত হয় মানুষের মন। জীবন রসায়নে আসে পরিবর্তন। হৃদয়ে সৃষ্টি হয় প্রণোদনা, নাড়া দেয় এক অব্যক্ত আবহ। কেবল মানব মানবীর মনেই নয় বৃক্ষরাজি, পক্ষী ও প্রাণিকূলেও এ হাওয়া দোলা দেয়। তাইতো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ‘আহা আজি এ বসন্তে এতো ফুল ফোটে। এতো বাঁশি বাজে... পাখি গায়। ’ চিরায়ত সুন্দর ভালোবাসা আর নব যৌবনের প্রতীক হয়ে বসন্ত এসেছে সবার জীবনে। বসন্তের আনন্দযজ্ঞ থেকে বাদ যায় না গ্রাম্যজীবনও। পিঠাপুলির সমারোহে গ্রামেগঞ্জে বসন্তের আমেজ একটু বেশিই দেখা যায়। বসন্তকে তারা আরো নিবিড়ভাবে বরণ করে। বসন্ত উৎসবের রয়েছে ঐতিহ্যময় ইতিহাস। মোগল সম্রাট আকবর প্রথম বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেন ১৫৮৫ সালে। নতুন বছরকে কেন্দ্র করে ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেন তিনি। এর মধ্যে অন্যতম বসন্ত উৎসব। এ উৎসবের সাথে জড়িয়ে আছে বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্য ও বাঙালি সত্তা। শহরের নাগরিক জীবনে বসন্তের আগমন বার্তা নিয়ে আসে অন্য এক অনুষঙ্গ। গায়ে হলুদ আর বাসন্তী রঙের শাড়ি জড়িয়ে হাতে হাত রেখে বেড়িয়ে পড়েন তরুণ-তরুণী সহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ। বসন্ত তারুণ্যেরই ঋতু, তাই সবারই মনে বেজে ওঠে, কবির এ বাণী- ‘বসন্ত ছুঁয়েছে আমাকে। ঘুমন্ত মন তাই জেগেছে। বসন্তের এই রঙ্গিন দিনে লস এঞ্জেলেসের সকল প্রবাসী বাংলাদেশীকে জানাই বসন্তের শুভেচ্ছা ।
শেয়ার করুন