যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহার করে বহিষ্কার কার্যক্রমে বাধা পেলেন ট্রাম্প
ফরাসি সৈকতের রহস্যজনক হলুদ স্পঞ্জ
অসেচনতার কারণে পর্যটকরা প্রায়ই সমুদ্র সৈকতে প্লাস্টিকের বোতল, ক্যান থেকে শুরু করে নানা ধরনের আবর্জনা ফেলে সৈকতের পরিবেশ দূষণ করেন। সমুদ্র উপকূল মারাত্মক দূষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শামুক-ঝিনুকসহ উপকূলীয় জীব বৈচিত্র্য। এবার এমনই এক দূষণের শিকার হয়েছে ফরাসি উপকূল।
ফ্রান্সের ওপাল উপকূলে হঠাৎ করে রহস্যজনকভাবে ভেসে এসেছে হাজারো হলুদ স্পঞ্জ। এক রাতের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি সমুদ্র উপকূল ভরে ওঠা এই হলুদ স্পঞ্জ দেখে বিস্মিত হন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। হলুদ স্পঞ্জগুলো আসলে কী তা নিয়ে শুরু হয় নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
যদিও পরিবেশ দূষণের আশঙ্কায় দ্রুত দমকল বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে সমুদ্র সৈকতগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। হলুদ স্পঞ্জের উৎস খুঁজতে এর নমুনা নিয়ে যাওয়া হয় ল্যাবরেটরিতে। হাইড্রোকার্বন দূষণের আশঙ্কা থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন পরিবেশভিত্তিক এনজিও সি-মার অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞানীরা। তাদের ভয় ছিল, হাইড্রোকার্বন দূষণের ঘটনা হুমকির মুখে পড়তে পারে জীববৈচিত্র্য। ভারী ধাতুর মতো কোন পরিবেশ দূষণকারী উপাদানের অস্তিত্ব রয়েছে কীনা সে ব্যাপারটিও খতিয়ে দেখার ওপর গুরুত্ব দেন বিজ্ঞানীরা। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হলুদ স্পঞ্জের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হন বিজ্ঞানীরা।
হলুদ স্পঞ্জগুলোকে প্যারাফিন ওয়াক্স হিসেবে চিহ্নিত করেন তারা। মূলত পেট্রলিয়াম, কয়লা ও তেলের মিশ্রণে তৈরি হওয়া এক ধরনের জটিল যৌগ প্যারাফিন ওয়াক্স। প্যারাফিন ওয়াক্স থেকে বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করা হয় মোমবাতি কিংবা রঙিন খড়ির মতো দ্রব্যাদি। বিভিন্ন ধরনের শিল্পের উপজাত প্যারাফিন ওয়াক্স নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন হতে নিষেধ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
ফরাসি পাবলিকেন্স লে ভোয়েক্স ডু নর্ড এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, হাইড্রোকার্বনের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেলেও তা জনস্বাস্থ্যের জন্য খুব বেশি ক্ষতিকর নয়। ফ্লোরা, ফুনারও খুব বেশি ক্ষতি হবে না। তবে হলুদ স্পঞ্জগুলোতে ক্লোরিন এবং পলিসাইক্লিকের মতো হাইড্রোকার্বনের মতো উপাদান থাকায় তা পরিবেশের দূষণে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিজ্ঞানীরা সন্দেহ করছেন, প্যারাফিন ওয়াক্সের মতো নানা ধরনের ক্ষতিকর উপাদান পরিবহন করা হয় ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে। যে কোন একটি জাহাজের দুর্ঘটনা অথবা জেনে-বুঝে সমুদ্রে ফেলে দেয়া থেকেই এটি ঘটতে পারে।
শেয়ার করুন