যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহার করে বহিষ্কার কার্যক্রমে বাধা পেলেন ট্রাম্প
এইচআইভি প্রতিরোধে রিং আবিষ্কার
এই রিং মেয়েদের সার্ভিক্সের ওপর বসাতে হয়। ছবি: সংগৃহীত
তরুণীদের পছন্দ, পুরুষেরাও সুখী
এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধের এক পরীক্ষায় সফল হয়েছেন বলে দাবি করেছেন
যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। দেশটির অল্প বয়সী মেয়েদের মধ্যে এই পরীক্ষাটি
চালানো হয়েছে। এই পরীক্ষায় মেয়েরা তাদের যোনিতে প্লাস্টিকের তৈরি
নমনীয় একটি রিং ব্যবহার করেছে, যা তাদেরকে এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে
রক্ষা করেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
এই রিংটির সাথে মেশানো থাকে এন্টি-রেট্রোভাইরাল ওষুধ ডেপিভিরাইন এবং প্রত্যেক ছ'মাস পরে পরে এটা বদলাতে হয়। রিংটির আকার নারীদের জন্মনিরোধক ডায়াফ্রামের সমান যা বসানো হয় সার্ভিক্সের ওপর।
গবেষণায় দেখা গেছে রিংটি ব্যবহার করে এইচআইভির সংক্রমণ ৫৬ শতাংশ কমানো সম্ভব হয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা শুরুর আগে সাফল্যের বিষয়ে খুব একটা আশাবাদী ছিলেন না। কারণ অল্পবয়সী মেয়েরা সাধারণত যৌন সম্পর্কের সময় এ ধরনের ডিভাইস পরতে উৎসাহী হয় না।
এইচআইভি ভাইরাস। ছবি: সংগৃহীত
গবেষণার ক্ষেত্রে, যৌন সম্পর্কের ব্যাপারে অত্যন্ত সক্রিয় এরকম অল্পবয়সী নারীদের কাছে এই রিং সরবরাহ করা হয়েছিল। তাদের বয়স ১৫ থেকে ১৭। তারা ছ'মাস ধরে এটি ব্যবহার করেছেন। রিংটিকে তারা পছন্দও করেছেন। রিং ব্যবহারকারীদের ৯৫ শতাংশ বলেছেন, রিংটি ব্যবহার করা খুব সহজ এবং ৭৪ শতাংশ বলছেন, এটি যে তারা পরে আছেন সেটি তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে বুঝতেও পারেন নি।
তবে পরীক্ষাটি চালানোর আগে আশঙ্কা করা হয়েছিল যে পুরুষ যৌন-সঙ্গীরা হয়তো এটি পছন্দ নাও করতে পারেন। কিন্তু দেখা গেছে রিংটির ব্যবহার তাদেরকে আরও বেশি আনন্দ দিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর ফলে পুরুষ সঙ্গীরা কনডম ব্যবহার করছে কি না এখন আর তার ওপর নারীদেরকে নির্ভর করতে হবে না।
এইচআইভি প্রতিরোধে বাজারে প্রচলিত একটি ওষুধ। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ এলার্জি এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক ড. অ্যান্থনি ফসি বলেছেন, নারীরা যদি নিজেরাই নিজেদের রক্ষা করতে পারে, এবং তাদেরকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়, যেটা কিনা খুবই গোপনীয় এবং নির্ভরযোগ্য, সেটা তাদেরকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের অগ্রগতি।
রিং গবেষণার সাফল্য তুলে ধরতে প্যারিসে এইচআইভি সংক্রান্ত সম্মেলনে বলা হয়, যেসব সমাজে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে নারীরা এখনও দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক তারা এরকম এক সংক্রমণের ব্যাপারে খুবই অসহায়। নারীরা যাতে এইচআইভির সংক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে তার জন্যে একটি ডিভাইস আবিষ্কারের লক্ষ্যে পরিচালিত এক উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এই রিং ব্যবহার করা হচ্ছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সারা বিশ্বে যত নারী এই ভাইরাসের সংক্রমণে
আক্রান্ত হয় তাদের পাঁচ ভাগের এক ভাগেরই বয়স ১৫ থেকে ২৪। আফ্রিকায়
সাহারা মরুভূমির আশেপাশের দেশগুলোতে প্রতিদিন এক হাজারের মতো নারী এতে
আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই একই ধরনের একটি গবেষণা আফ্রিকার অল্প বয়সী মেয়েদের
মধ্যেও চালানো হবে বলে সম্মেলনে জানানো হয়।
সূত্র: বিবিসি
শেয়ার করুন