আপডেট :

        ডোমিনিকান রিপাবলিকে নিখোঁজ সুদিক্ষা কোনানকির সন্ধানে জোর তল্লাশি চলছে

        লস এঞ্জেলেসে ট্রান্সজেন্ডার নারীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় LAPD-এর বিরুদ্ধে পরিবারের মামলা

        কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় প্রো-প্যালেস্টাইন কর্মী গ্রেফতার

        জিন হ্যাকম্যানের কুকুরের মৃত্যু ক্ষুধা ও পানিশূন্যতার কারণে, প্রতিবেদন প্রকাশ

        ক্যালিফোর্নিয়ায় স্টেট ফার্মের ২২% হোম ইন্স্যুরেন্স বৃদ্ধির অনুমোদন

        ট্রাম্পের এন্টি-DEI নির্বাহী আদেশ কার্যকর করার অনুমতি দিল আপিল আদালত

        পাসাডেনা হাসপাতালে সহিংসতার হুমকিতে লকডাউন, এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার

        স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলার

        ব্রাউজারে পাসওয়ার্ড নিরাপত্তা

        ব্রাউজারে পাসওয়ার্ড নিরাপত্তা

        দশকের পর দশক ধরে বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গারা

        অর্থনীতির উন্নয়নে পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে হবে

        মানুষের পকেট ব্যয় আফগানিস্তানের চেয়েও খারাপ

        শপথ নিলেন মার্ক কার্নি

        অপার্থিবের ‘আবছা নীল কণা’

        হিন্দু হয়েও মন্দিরে পুজো দিতে দেওয়া হত না

        নারায়ণগঞ্জে আরও দুই শিশুকে ধ র্ষ ণচেষ্টা

        রোহিঙ্গারা যেন আগামী বছর মিয়ানমারে ঈদ উদযাপন করতে পারে

        ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে: ট্রাম্প

        চলতি বছর সবজি দাম তুলনামূলক কম

জলবায়ু চুক্তি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত আগামী সপ্তাহে: ট্রাম্প

জলবায়ু চুক্তি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত আগামী সপ্তাহে: ট্রাম্প

ইতালির সিসিলির তাওরমিনাতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিশ্বের শিল্পোন্নত সাত দেশের জোট জি-সেভেনের শীর্ষ সম্মেলন। এই সম্মেলনের মূল আলোচ্যসূচি ছিল প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

জি-সেভেনভুক্ত ৬টি সদস্য রাষ্ট্রই এ চুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে তাদের অবস্থান সম্মেলনে পরিষ্কার করেনি।

সম্মেলনে জি-সেভেনভুক্ত দেশগুলোর নেতারা চেষ্টা করেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছ থেকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি নিয়ে কোনো অঙ্গীকার আদায় করতে পারেন নি। ট্রাম্প অবশ্য তার নির্বাচনী প্রচারের সময়ই এ চুক্তি থেকে সরে আসার কথা বলেছিলেন।

সম্মেলন শেষে ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট বার্তায় বলেছেন, ওয়াশিংটনে ফিরে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির বিষয়ে আগামী সপ্তাহে তার সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়ন করবেন তিনি। তখনই এ চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলা যাবে।

তার আগে শনিবার সম্মেলনের শেষ দিনে এক টুইটার বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আলোচিত প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন জানাবে, নাকি প্রত্যাখ্যান করবে- সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আগামী সপ্তাহে।”

ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তনকে ‘প্রয়োজন অনুযায়ী সময়ে সময়ে ওঠানো একটি ধাপ্পাবাজি’ বলে অভিহিত করেছিলেন। এ ছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ‘চীনের ধোঁকাবাজি’ বলেও ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন তিনি।

প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্যারিসের ‘কপ-২১’ জলবায়ু চুক্তিটিকেও পুরোনো ধারণা বলে নির্বাচনী প্রচারের সময় মত প্রকাশ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর যুক্তি দেখিয়ে ট্রাম্প জলবায়ু নীতি থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছিলেন।

কারণ, এ চুক্তির আলোকে যে জলবায়ু তহবিল গঠিত হয়, তার বড় জোগানদাতা যুক্তরাষ্ট্র। এই তহবিল থেকেই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো সাহায্য পায়।

আলোচিত ওই চুক্তিতে পৃথিবীব্যাপী ৫৫ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাসের বিষয়ে বলা হয়েছিল। চুক্তিটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্বাক্ষর করেছিলেন। বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবিলায় ওই চুক্তিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন পরিবেশবাদীরা।

প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী বিশ্বে কয়লার উত্তোলন কমিয়ে আনার কথা। কারণ, কার্বণ নিঃসরণে কয়লার ভূমিকা মুখ্য। আর জলবায়ু রক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা অধিক তাপ উৎপাদন ও প্রকৃতি ধ্বংসের কারণে শক্তি উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার বন্ধের বিরুদ্ধে।

কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়লার উত্তোলন বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন। কারণ, কয়লাখনি চালু ও উত্তোলনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, যা দিয়ে বেকার সমস্যা সমাধান করা যাবে।

তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই অনড় অবস্থান সত্ত্বেও জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক দপ্তর বিশ্ব উষ্ণতারোধে জি-সেভেনভুক্ত দেশের ভূমিকার বিষয়ে আশাবাদী। জলবায়ুবিষয়ক দপ্তরের প্রধান প্যাট্রিসিয়া এসপিনোসা বলেন, “আমাদের নিজেদের স্বার্থেই প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে। এটি বাস্তবায়িত হলে এর সুফল পাবে সবাই। আর চুক্তিটির বিষয়ে সবারই সম্মতি আছে। এমনকি তেল কোম্পানিগুলোরও।”

এদিকে বিশ্বনেতাদের মন্তব্য, ট্রাম্পের অনড় অবস্থান জলবায়ু চুক্তির বাস্তবায়নকে ‘খুব কঠিন’ অবস্থার দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, জি-সেভেনের বাকি নেতাদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধের বিরুদ্ধে একাই লড়ছেন ট্রাম্প।

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের কথায়ও উঠে এসেছে সেই চিত্র। গতকাল শনিবার সম্মেলন শেষের পর রয়টার্সকে দেয়া এক বক্তব্যে মেরকেল বলেন, “যদি খুব অসন্তুষ্টির কথা না-ও বলি, এটা বলতে হবে যে জলবায়ু বিষয়ে আলোচনা খুব কঠিন হয়ে উঠেছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থানে প্রায় একই মত অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিদেরও। চীনের প্রতিনিধিদলের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য রয়টার্সকে বলেন, জাতিসংঘ ও চীনের উদ্যোগে গত বছর সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। আগামী দিনগুলোতেও এই ধারা বজায় থাকবে বলে আশা করা যায়।

এ ছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণতা কমিয়ে আনতে অনেক দেশের সরকারই আইন পাস করেছে। এতে কারখানার বিনিয়োগকারী ও অন্যদের মধ্যেও সচেতনতা তৈরি হয়েছে।

তবে যত যাই হোক, যুক্তরাষ্ট্রের সদিচ্ছা ছাড়া প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন অসম্ভব বলে মত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু অবস্থা দেখে এমন মনে হচ্ছে, অনড় ট্রাম্পকে বোঝানো প্রায় অসম্ভব। তবুও প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষায় জলবায়ু বিষয়ে ট্রাম্পের দিকেই তাকিয়ে বিশ্ব।


এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত