সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কড়া হুঁশিয়ারি রাশিয়ার
সিরিয়ার হোমস নগরীর কাছে সরকারি বাহিনীর একটি বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে রাশিয়া। ইরানও এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। খবর আল জাজিরা ও আরটি নিউজের।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের ওপর আগ্রাসন। প্রেসিডেন্ট পুতিন বিশ্বাস করেন, সিরিয়ার ওপর এই হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।’
পেসকভ জোর দিয়ে বলেন, ‘সিরিয়ার সেনাবাহিনীর কাছে কোনো রাসায়নিক অস্ত্র নেই। জাতিসংঘের রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংস্থার বিশেষ ইউনিটের একটি পর্যবেক্ষক দল বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে নিশ্চিত করেছেন।’
পেসকভ আরো বলেন, ‘এই হামলার কারণে নিশ্চিতভাবে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি ঘটবে। ইতিমধ্যে দুই দেশের সম্পর্ক শোচনীয় পর্যায়ে আছে।’
পুতিনের মুখপাত্র আরও বলেন, সন্ত্রাসীদের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র এড়িয়ে যাচ্ছে। এই কারণে পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে ক্ষতির দিকে যাচ্ছে বলে পুতিন মনে করেন।’
ইরানও সিরিয়ার শেরাত বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি বলেন, ‘ইরান তীব্রভাবে এ ধরনের একতরফা হামলার নিন্দা জানাচ্ছে। এ পদক্ষেপ সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের শক্তিশালী করবে এবং সিরিয়া ও এ অঞ্চলের পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠবে।'
এদিকে সৌদি আরব, তুরস্ক, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, ফ্রান্স, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলাকে পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছে।
সৌদির সরকারি সংবাদ সংস্থা স্পা এক বিবৃতিতে জানায়, রাসায়নিক গ্যাস হামলার জবাবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সাহসী পদক্ষেপকে ‘পুরোপুরি সমর্থন’ জানাচ্ছে সৌদি আরব।
ব্রিটেন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ হামলা সিরিয়া সরকারের বর্বর রাসায়নিক হামলার সমুচিত জবাব। আগামীতে এ ধরনের হামলা ঠেকানোর উদ্দেশেই এ পদক্ষেপ।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলা এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তাই দিচ্ছে যে, বিশ্বের দেশগুলো রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার মেনে নেবে না। তিনি সিরিয়ায় শান্তি নিশ্চিত করতে রাশিয়াকে আরও বেশিকিছু করার আহ্বান জানান।
তুরস্কও মার্কিন হামলাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও সিরিয়া সরকারের বর্বরতার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানে অটল থাকা উচিত বলে তুরস্ক মনে করে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, রাশিয়া এবং ইরানকে বুঝতে হবে যে, আসাদকে সমর্থন করার কোনও মানে হয় না এবং সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক হামলা ‘অপরাধী সরকারব্যবস্থার’ বিরুদ্ধে একটি সতর্কবার্তা।
মঙ্গলবার সিরিয়ার ইদলিবে রাসায়নিক গ্যাস হামলার জবাবে সরাসরি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর আদেশ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তার আদেশে শুক্রবার সিরিয়ার বিমান ঘাঁটিতে ৬০টি টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এতে ছয়জন নিহত হয়েছেন। গত ছয় বছর ধরে চলা সিরিয়া যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এটি সরাসরি সরকারি বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা।
এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি
শেয়ার করুন