ডোমিনিকান রিপাবলিকে নিখোঁজ সুদিক্ষা কোনানকির সন্ধানে জোর তল্লাশি চলছে
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া!
মানবসভ্যতার ইতিহাসই আসলে যুদ্ধের ইতিহাস। যেদিন আদিম সাম্যবাদী সমাজ ব্যবস্থা থেকে মানুষের উত্তোরণ ঘটে, উৎপদিত হয় প্রয়োজনের অতিরিক্ত সামগ্রী, মূলত সেদিন থেকেই শুরু হয় সেই সামগ্রী দখলে নেওয়ার লড়াই।
কখনো মানুষ একাই লড়েছে, কখনো বা জোটবদ্ধ হয়ে, আরেকটি জোটের বিরুদ্ধে। এর পথ ধরে আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী দেখেছে দুটি বিশ্বযুদ্ধ।
যুদ্ধের শেষ লগ্নে ১৯৪৫ সালের ৪ জুন গঠিত হয় জাতিসংঘ। আলোচনার টেবিলে বসে বিরোধের নিষ্পত্তি করাই এর উদ্দেশ্য। কিন্তু তারপরও জাতির নিজস্ব বিরোধ শুধু সীমান্তের ভেতরেই আটকে থাকছে না, ছড়িয়ে পড়ছে পৃথিবীতে। এবং কোনো কোনো বিরোধের নিষ্পত্তি কিন্তু আলোচনার টেবিলে হচ্ছে না। শেষমেষ তার আপাত সমাধান হয় রণাঙ্গনে।
সিরিয়া বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে একদিকে যুক্তরাষ্ট ও তার মিত্ররা। অপরদিকে রয়েছে রাশিয়া, তারা মদদ দিচ্ছে সরকারি বাহিনীকে। আসাদবিরোধী বা বিদ্রোহীদের মদদ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা। এরই মধ্যে সিরিয়ার প্রতিবেশি তুরস্ক সাবধান করে দিয়েছে যে, সিরিয়া সঙ্কটের অচিরেই সমাধান না হলে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া সারা পৃথিবীকে যুদ্ধে টেনে আনতে পারে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার নেয়। গত সপ্তাহে সিরিয়া সরকার ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে বলে ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যদি সিরিয়া সরকার অবরুদ্ধ আলেপ্পোয় বোমা বর্ষণ অব্যাহত রাখে।
সাইবার হামলার হুমকি দেওয়ায় গত রোববার ওয়াশিংটনের নিন্দা করে রাশিয়া। এর আগে ওবামা প্রশাসন অভিযোগ করে যে, আমেরিকার রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কম্পিউটার হ্যাক করে রাশিয়া।
এই সিরিয়াকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার সঙ্গে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছিন্ন করে যুক্তরাষ্ট।
এ অবস্থায় তুরস্কের উপপ্রধানমন্ত্রী নুম্যান কুর্টুলমুস ডেইলি মেইলকে বলেন, ‘এ ধরনের প্রক্সিওয়ার চলতে থাকলে, আমার কাছে পরিস্কার যে, আমেরিকা ও রাশিয়া যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।’
‘এই যুদ্ধই হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা। আসলেই এই যুদ্ধ ব্যাপকভিত্তিক আঞ্চলিক যুদ্ধ ও বিশ্বযুদ্ধের দুয়ারে ঠেলে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে,’ বলেন তিনি।
এ মাসের প্রথমদিকে রুশ পত্রিকা মস্কোভস্কি কমসোমোলেটস সিরিয়া সঙ্কটে হস্তক্ষেপ করে বিস্ময়কর রকমের ঝঁকিপূর্ণ খেলা খেলছে। এই যুদ্ধ বিশ্বকে ঠেলে দিতে পারে বিশ্বযুদ্ধের মুখে।
টেবলয়েটটির এক নিবন্ধে বলা হয়, সিরিয়া সঙ্কট রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রকে এমন একটি বৈরি অবস্থায় নিযে গেছে যে, যা মনে করিয়ে দেয় ১৯৬২ সালের মিসাইল সঙ্কটের কথা। সিরিয়া সঙ্কটের ফলে সরাসরি সামরিক সংঘাতে লিপ্ত হলেও বিচিত্র কিছু হবে না।
রুশ সামরিক বাহিনী সোমবার রুশ ও সিরিয়া বাহিনী পূর্বাঞ্চলীয় জেলা আলেপ্পোয় আট ঘণ্টার অস্ত্র বিরতির ঘোষণা দেয়। কিন্তু তারা বিরতির কোনো প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেনি।
ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটোরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, রুশিয়ানদের এই ঘোষণার আগের ২৪ ঘণ্টায় রুশ বোমা বষণে ৫০ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়। তাদের মধ্যে ১৮ শিশুও রয়েছে।
এই সঙ্কট চলার সময় প্রতিবেশি দেশ ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুলের দখল আইএসের কাছ থেকে পুনরায় উদ্ধারের জন্য কুর্দি ও ইরাকী বাহিনী অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে মদদ দিচ্ছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন বাহিনী।
মস্কোভস্কি কমসোমোলেটস সোমবার ঘোষণা করে যে, সাম্প্রাদিক সহিংসতা যদি শুরু হয় তাহলে হাজার হাজার শরনার্থী ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে পারে। এই উদবাস্তুদের সামাল দিতে প্রস্তুত রয়েছে তুরস্ক সরকার।
‘যদি যথাযথভাবে মসুল অভিযান পরিচালনা করা হয়, তাহলে তুরস্ক অভিমুখে উদ্বাস্তুর ঢল নামবে বলে মনে হয় না,’ বললেন কুরতুলমুস। কিন্তু মসুলে অভিযান যদি ঠিকমতো পরিচালিত না হয়, তাহলে উদ্বাস্তু ঢল ঠিকই নামবে তুরস্কের পথে,’ বললেন তিনি।
জাতিসংঘ উদ্বাস্তু সংস্থা হিসেব অনুযায়ী, মসুলের যুদ্ধের কবল থেকে পাণে বাঁচার জন্য লাখ মানুষ ঘরবড়ি ছেড়ে পালিয়ে তুরস্কে আশ্রয় নিতে পারে। ১.৫ মিলিয়ন অধিবাসী অধ্যুসিত শহরটি দখল করে নিয়ে খিলাফত ঘোষণা করে।
এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি
শেয়ার করুন