করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ হাজার মিঙ্কের মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৫ হাজারের বেশি মিঙ্ক মারা গেছে। আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রীয় কৃষি দফতর জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি খামারকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করছেন তারা।
গেলো সপ্তাহে ডেনমার্ক ১ কোটি ৭০ লাখ মিঙ্ককে মেরে ফেলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তাদের দাবি, এ প্রাণীর মাধ্যমে করোনা ভাইরাস চরিত্র বদল করে মানুষের শরীরে প্রবেশে করতে পারে। ব্যর্থ করে দিতে পারে করোনা ভ্যাকসিনের কার্যকরিতা। প্রাণীটি থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ায় কি না, বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।
যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ, উইসকনসিন এবং মিশিগানে করোনা ভাইরাসে মিঙ্কের মৃত্যু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, মিঙ্ক হত্যার কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের। ডেনমার্কের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কথাও জানায় তারা।
মঙ্গলবার মার্কিন কৃষি বিভাগ জানায়, তারা বিশ্বাস করে কোয়ারেন্টাইন এবং বায়োসিকিউরিটি ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে করোনা সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব হবে।
কৃষি বিভাগ জানায়, ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন তারা। করোনা আক্রান্ত মিঙ্ক খামার পর্যবেক্ষণ করছে কৃষি বিভাগ।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রজননের জন্য ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫০টি মিঙ্ক রয়েছে। প্রতি বছর ২৭ লাখ মিঙ্কের জন্ম হয় দেশটিতে। উইসকনসিনে সবচেয়ে বেশি মিঙ্ক উৎপাদন হয়। তারপরই আছে উটাহ।
উইসকনসিন এবং উটাহতে আক্রান্ত মানুষ থেকে করোনা সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মিশিগানের খামারের মিঙ্কগুলো মানুষ থেকে আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
আগস্টে উটাহ রাজ্যে প্রথম মিঙ্ক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। সেখানকার ৯টি খামারের ১০ হাজার ৭০ মিঙ্ক মারা গেছে। সবগুলো মানুষ থেকে ছড়ানো করোনা ভাইরাসে মারা গেছে। নয়টি ছাড়াও আক্রান্ত সব খামারের করোনা পরীক্ষা শেষ হয়েছে। মানুষের মতো করোনা আক্রান্ত মিঙ্কের শরীরে উপসর্গ নেই বা মৃদু উপসর্গ রয়েছে বলে জানান, রাজ্যের পশুচিকিৎসক ডিন টেলর।
আক্রান্ত মিঙ্কের পর্যবেক্ষণসহ পশু এবং মানুষের করোনা পরীক্ষা-চিকিৎসার বিষয়ে রাজ্যগুলোকে সিডিসি সহায়তা দিচ্ছে বলে জানানো হয়।
মিঙ্কসহ অন্যান্য প্রাণী এবং মানুষের মধ্যকার সংক্রমণের বিষয়ে অধিক তথ্য জানতে পর্যবেক্ষণ সহায়তা করছে। মানুষের মধ্যে করোনা ছড়াতে প্রাণীগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বলা হয় সিডিসির বিবৃতিতে।
চীনের উহানের ফুড মার্কেটে বাদুর বা অন্য কোনো প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়। যদিও এরকম অনেক প্রশ্নের অনেক উত্তর এখনো অমীংসিত।
উইসকনসিনের দুটি খামারে ৫ হাজার মিঙ্ক মারা গেছে। রাজ্যের পশুচিকিৎসক ডারলেনে কোনকলে এ তথ্য জানান। বলেন, একটি খামার কর্তৃপক্ষ ভাইরাস যাতে ছড়াতে না পারে সে জন্য মৃত প্রাণীগুলোকে মাটিতে পুঁতে ফেলেছে। অন্য খামারের মালিক মৃত মিঙ্কগুলোকে মাটিতে পুঁতে ফেলার জন্য গর্ত খনন করছেন। বর্তমানে সেগুলোকে মুখ আটকানো মেটাল কন্টেইনারে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে মিশিগান জানায়নি তাদের ওখানে কতো সংখ্যক মিঙ্ক মারা গেছে।
প্রাণীর শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণরোধে খামার কর্তৃপক্ষকে মাস্ক, গ্লাভসসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিড়াল, কুকুর, সিংহ এবং বাঘও করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে মিঙ্ক। জানিয়েছে মার্কিন কৃষি বিভাগ।
শেয়ার করুন