পোল্ট্রি ও ডেইরী ফার্মে সফল নারী সেলিনা
অদম্য পরিশ্রম আর সাহসিকতা নিয়ে পোল্ট্রি ফার্ম ও ডেইরী ফার্ম করে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে সুনাম অর্জন করেছেন কক্সবাজারের প্রথম নারী উদ্যোক্তা নয়ন সেলিনা।
কক্সবাজার শহরের কলাতলীতে ৩০ শতক জমিতে নিজের হাতে গড়ে তোলা প্রকল্পে রাত দিন পরিশ্রম করে তিলে তিলে দাঁড় করিয়েছেন তাঁর স্বপ্ন বিস্তারের পরিকল্পাগুলো ।জীবন সংসারে যুদ্ধ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন ওই অদম্য নারী।জীবন সংসারে কোন বাধাই তাকে ঘায়েল করতে পারেনি । আজ তিনি কক্সবাজারে একজন মডেল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে সবার কাছে সমাধিত হয়েছে তাঁর কর্মের গুনে।
১৯৯৫ ই দিকে তিনি ১০০ টি লেয়ার মুরগি দিয়ে জীবনের সূচনার যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানে তাঁর প্রকল্পের মধ্যে পোল্ট্রি ফার্মে লেয়ার (ডিম পাড়ার ) মুরগি রয়েছে ৬ হাজার ,ব্রয়লার (মাংসাসী ) মুরগি রয়েছে ৪ হাজার , ডেইরী ফার্মে রয়েছে ১৮ টি পিজিয়াম বিদেশী গাভী।
যেগুলো থেকে প্রতিদিন ৮০ লিটারের মতো দুধ পান, তা দিয়ে তিনি শহরবাসীর দুধের চাহিদা মিটান । এছাড়া তিনি সখের বশে ১০ টি ছাগল ,প্রায় ১০০ জোড়া কবুতর পালন করে আসছেন।এতেও তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে । তাঁর পরিসংখ্যানূায়ী প্রতি ১৫-২০দিন পর তিনি ২০ জোড়া কবুতরের বাচ্চা আসে। আর এর থেকে তারঁ বাৎসরিক আয় হয় ২ লাখ টাকা ।বর্তমানে তাঁর প্রকল্পে ৮ জন শ্রমিক নিয়মিত মাসিক বেতনে কাজ করছেন।
এদিকে ৬ হাজার লেয়ার মুরগি থেকে দিনে গড়ে প্রায় ৫০০০টি ডিম উৎপাদন হয় ।বর্তমানে ডিমের বাজার দর কম থাকায় তিনি প্রতিদিন প্রায় ২৫০০ হাজার টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন । তাছাড়া মাঝে মধ্যে মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে যায় । তবে এবার তিনি বিপ্লব ঘটিয়েছেন ব্রয়লার মুরগির ক্ষেত্রে।
এবার অধিক পরি চর্চা আর যন্তের কারনে মাত্র ২৮ দিনে প্রতি মুরগির ওজন ২কেজি ২০০গ্রাম থেকে ২কেজি ৪০০গ্রাম পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি লাভের মুখ দেখেছেন ।এই বেচে তিনি প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো আয় হবে বলে ধারনা করছেন ।
অপরদিকে তিনি কক্সবাজারের একজন প্রথম উদ্যোক্তা তাঁর ফার্মের বর্জ্যগুলো দিয়ে বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করেছেন ।এর থেকে যেই গ্যাস উৎপন্ন হয় তা দিয়ে তাঁর সংসারের পুরো মাসের জ্বালানীর চাহিদা মিটে যায় । এছাড়া তিনি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে পরিকল্পনা করেছিলেন তা ভেস্তে গেছে অর্থায়নের অভাবে ।ব্যাংক থেকে তিনি যে পরিমানে সহযোগিতা পাওয়ার কথা তা পাচ্ছেন না বলে তাঁর ঐপ্রকল্পের কাজ স্থগিত রয়েছে।এজন্য তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক কক্সবাজার শাখার কর্মকর্তাদের দুষলেন। এবং তাদের স্বদিচ্ছা না থাকার কারনে তিনি যথা সময়ে কোন সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না বলে জানান।
এ ব্যাপারে জেলার কৃর্তি নারী উদ্যোক্তা নয়ন সেলিনার সাথে কথা হলে তিনি জানান, ব্যাংক তার সাথে বার বার প্রতারনা করে আসছে। তাঁকে যে ভাবে সার্পোট দেওয়ার কথা তা তাঁরা দিচ্ছে না । ফলে তিনি পরিকল্পনা অনুযায়ী আগাতে পারছেন না বলে জানান।এজন্য তিনি সরকারের উপর মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।
তাছাড়া তিনি অভিযোগ করে জানান উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা তাঁকে ঠিকমতো সহযোগিতা করছেন না ।ফলে তিনি বিভিন্ন বিল্বনার শিকার হন।তিনি সব সুযোগ-সুবিধা যদি ঠিক ভাবে পান তাহলে তিনি কক্সবাজারের ডিম ,দুধ ও মুরগির চাহিদা পুরন করে আশ পাশের জেলা গুলোর চাহিদা পুরনে সক্ষম হবেন বলে মনে করেন এই সফল নারী উদ্যোক্তা নয়ন সেলিনা।
শেয়ার করুন