লস এঞ্জেলেসে ফের শক্তিশালী বাতাস, সতর্ক অবস্থানে দমকল বাহিনী
শিল্প-কলকারখানা কিভাবে লুটপাট করে ফোকলা বনিয়ে দেওয়া হলো
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি’র সাবেক সভাপতি শহিদুল্লাহকে আমার এক জীবন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া মনে হতো। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় শিল্প-কলকারখানার কোথায় সংকট, কেন তা রুগ্ন, কিভাবে তা লুটপাট করে ফোকলা বনিয়ে-- তাকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে, ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে পানির দামে কিনে নিয়ে, তাতে আবারো লোকসান দেখিয়ে লুটেরারা কিভাবে ব্যবস্যা করছে তিনি তার আদ্যপান্ত অবলিলায় বলতেন। রাষ্ট্রায়ত্ব ২৫টি পাটকলের লুটপাটের তথ্য-প্রক্রিয়া, নথিপত্র মুখস্ত বলতে পারতেন তিনি। এখান থেকে পরিত্রাণের কি ধরণের নীতি-ব্যবস্থাপনা দরকারও তারও বিশেষজ্ঞ ধারণা সহজেই বলে দিতেন। এ সব বিষয় গল্পের মত করে বলার অসাধারণ যোগ্যতা ছিল তার। অথচ তিনি ছিলেন সামান্য পড়াশোনা জানা একজন সাধারণ শ্রমিক ও শ্রমিকনেতা।
আমরা যখন এরশাদ বিরোধী আন্দোলনক করছি তখন আমাদের একটি দাবী/স্লোগান ছিল পাটের দাম ৫০০ টাকা দিতে হবে। তখন এরাশাদ সাহেব বলেছিলেন কেউ যদি পাটের দাম ৫০০ টাকা দিতে পারেন- তাহলে তিনি ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন। সেই সময় শ্রমিকনেতা শহিদুল্লাহ চৌধুরী তাৎক্ষনিক সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন কিন্তু এরশাদ সাহেব আর এটা নিয়ে কোন কথা বলেননি।
শহিদুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন বাওয়ানী জুট মিলের বারবার নির্বাচিত সভাপতি। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র টিইউসির সভাপতি। প্রায় ৫০ বছর তিনি শ্রমিক রাজনীতিতে ছিলেন। কোন স্বার্থ-সুবিধার পিছনে না হেটে নিতান্তই শ্রমিকের জীবনযাপনই করেছেন, শ্রমজীবী মানুষের রাজনীতি করেছেন, যে কারণে অভাব-দারিদ্র তার পিছু ছাড়েনি। সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর পার্টিতে যে বিপর্যয় আসে সেই সময় তিনি সিপিবি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। পরবর্তিতে তিনি নিজ যোগ্যতার এই পার্টির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
কমিউনিস্ট পার্টি শ্রমিকশ্রেণীর রাজনৈতিক দর্শণে বিশ্বাসী একটি সংগঠন, তিনি ছিলেন তাঁর শতভাগ প্রতিনিধি। তাঁর মৃত্যুতে আনত শ্রদ্ধা ও গভীর শোক প্রকাশ করছি।
শেয়ার করুন