আপডেট :

        নির্বাচনের ছাড়া এই মুহূর্তে বিএনপির কোনো রাজনীতি নেই

        হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আজ

        আসছে নতুন দল: উপদেষ্টা নাহিদ

        ঢাকায় এসে নিখোঁজ হওয়া সুবাকে দেখা গেল ক্যামেরায়

        ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ

        ইমিগ্রেন্ট ছাড়া একদিন: লস এঞ্জেলেসের প্রতিবাদ রাতেও অব্যাহত

        ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ

        মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে শুল্ক আরোপ স্থগিত, চীনের সঙ্গেও আলোচনা হবে

        যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে পাল্টা শুল্ক চীনের

        নিউইয়র্কে বাড়ির সামনে বাংলাদেশিকে গুলি

        হাসিনা-রেহানাদের ৪ বাগানবাড়ি, আছে ডুপ্লেক্স ভবনও

        বাংলাদেশ ব্যাংকের সব কর্মকর্তার লকার ফ্রিজ করার নির্দেশ

        এবার ইউরোপে শুল্ক আরোপের হুমকি

        মৌলভীবাজারে যুবলীগ নেতা রুহুল আমিন আটক

        দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় আঘাত হানবে দুইটি ঝড়

        লস এঞ্জেলেসে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ, ১০১ ফ্রিওয়েতে তীব্র যানজট

        প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে গ্র্যামিতে কান্ট্রি অ্যালবামের পুরস্কার

        অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ

        এলিমিনিটরে লড়াইয়ের আগে দলের শক্তিও বাড়ায় রংপুর

        কিছুদিন পর দেখব খুনিরা বাইরে

দারিদ্র্যতা জয় করতে শিক্ষা বিস্তারে নিয়োজিত উদয়ন

দারিদ্র্যতা জয় করতে শিক্ষা বিস্তারে নিয়োজিত উদয়ন

"তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটা শিক্ষিত জাতি উপহার দেব" এই বাক্যটি  আমাদের সবার জানা । একই সুরে সুর মিলিয়ে উদয়ন ফাউন্ডেশন সেই উক্তিটি কে সত্য করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে । আমরা মানুষরা সামাজিক জীব, সমাজে আমাদের বসবাস, সমাজে চলাচল করতে গেলে আমাদের চোখে অনেক কিছু পড়ে। আমরা দেখতে পাই ক্ষুধার যন্ত্রনায় কেউ কাতরাচ্ছে, কেউবা অসুস্থতায় ভুগছে দিনের পর দিন। আমরা তাদের জন্য কতটুকুই বা করতে পারি? হয়তো অনাহারের মুখে দু’বেলা অন্ন তুলে দিতে পারি, হয়তোবা অসুস্থ মানুষটির জন্য ১ মাসের ঔষধ কিনে দিতে পারি, তারপর? তারপর কি আমরা কোন খোঁজ রাখি তাদের? আর যদি আমরা তাদের খোঁজ রাখি, কি করতে পারি তাদের বর্তমান অবস্থাকে পরিবর্তন করার জন্য? “উদয়ন ফাউন্ডেশন” এই দরিদ্র অবস্থার পরিবর্তনের র্দীঘ স্থায়ী পরিকল্পনা নিয়ে ১৯৯৫ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠা হয়।

 “উদয়ন ফাউন্ডেশন” এর প্রতিষ্ঠাতা রেদোয়ান বারী চৌধুরী শিক্ষাকে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিলেন, দারিদ্রতা কে দীর্ঘস্থায়ী ভাবে উন্মোচনের জন্য। ১৯৯৫ সালে রেদোয়ান চৌধুরী ৩ জন সদস্য নিয়ে তার জন্মস্থান থেকে ক্ষুদ্র আকারে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করেন। অবশেষে ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানের বিস্তৃতি লাভ করে, এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়।

 ১৯৯৫ সালে দরিদ্র শিশুদের মাঝে শিক্ষা বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে উদয়ন ফাউন্ডেশন এর কার্যক্রম শুরু হয়, তারপর ২০১০ সালে, বিভিন্ন জেলার স্কুলের সাথে যোগাযোগ করে ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত  দরিদ্র শিশুদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়। একই সালে হাত ধোয়ার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে কয়েকটি জেলায় শিশুদের মাঝে Hand Sanitization বিতরন করা হয় এবং আজ অবধি কিছু সংখ্যক ‍স্কুলে Hand Sanitization বিনা মূল্যে বিতরন করা হচ্ছে।

 তারপর, ২০১১ সালে এর মধ্যে উল্লেখিত “শর্তাধীন নগত টাকার সমপরিমান দ্রব্য হস্তান্তর” এর কার্যক্রম হাতে নেয়। এই কার্যক্রম এর মূল উদ্দেশ্য হলো, শিশু শ্রম ও শিশু পাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং শিশুদের পড়াশোনা অব্যাহত রাখা। বাংলাদেশের দরিদ্র ঘরের একজন শিশু যদি কাজ করে তবে তার মাসিক আয় গড়ে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার উদ্ধর্ে নয়, তাই উদয়ন ফাউন্ডেশন একটি পরিবারকে তার সন্তানের অর্জিত টাকার সমপরিমান দ্রব্য  দিয়ে সেই পরিবারের শিশুটি কে স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন এই “শর্তাধীন নগদ টাকার সমপরিমান দ্রব্য হস্তান্তর” কার্যক্রম এর মাধ্যমে।

 বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য উদয়ন ফাউন্ডেশন বিনামূলে্য সবার মাঝে কম্পিউটার শিক্ষার উৎসাহ তৈরি করেন। এই উৎসাহ কে ধরে রাখার জন্য বিনা মূল্যে চট্রগ্রামে ৩টি, মিরশরাইয়ে ৫টি, ফেনীতে ৪টি এবং সাতক্ষীরায় ২টি এবং সিলেটে ১টি কম্পিটার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন  এবং যার প্রত্যেকটি কম্পিউটার সেন্টার উদয়নের প্রতিনিধি ও উদয়নের পাঠ্য পুস্তক দ্বারা পরিচালিত।

 প্রতিবন্ধিদের জন্য বাংলাদেশে তেমন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা প্রতিবন্ধি ট্রেনিং সেন্টার নেই, আর যা আছে তা স্বল্প আয়ের মানুয়ের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তাই উদয়ন ফাউন্ডেশন প্রতিবন্ধিদের নিয়ে কাজ করেছে, প্রতিবন্ধিদের অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে উদয়ন ফাউন্ডেশন সাতক্ষীরায় ক্লান্তিহীন কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে।

 এছাড়া ও উদয়ন ফাউন্ডেশন দুস্থ পরিবারের শিশুদের পড়া লেখার উন্নতির জন্য গনিত, ইংরেজী, বিজ্ঞান এবং অন্যান্য বিষয় শিশুদের দক্ষ করে তোলার জন্য উদয়ন ফাউন্ডেশন ভিডিও তৈরি করছে যা বিনামুল্যে শিশুদের মাঝে বিতরন করা হবে যাতে করে তারা সবার সাথে একসাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। এতে করে গরীব ছাত্র/ছাত্রীদের বাবা মায়ের প্রাইভেট পড়ানো নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। কারন উদয়ন এমনি ভাবে ভিডিও টি তৈরি করবে যা একজন শিক্ষক হিসেবে কাজ করবে।

 উদয়ন ফাউন্ডেশনের বর্তমান প্রকল্প এর মধ্যে অন্যতম প্রকল্প গুলো হলো, দরিদ্র শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান, বাংলাদেশের যুব সমাজের উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ব্যাবসার মাধ্যমে মহিলাদের উন্নয়ন, বর্জ্য থেকে এর্নাজি, মেয়েদের মেধা এবং দক্ষতার উন্নয়ন, প্রযুক্তি কে কাজে লাগিয়ে দেশের সকল জনগোষ্ঠির উন্নয়ন, শীতের সময় হত দরিদ্রের কে সুরক্ষা করা । এইসব প্রকল্প বাংলাদেশের বিভিন্ন জাগায় স্বয়ংক্রীয় ভাবে চলে আসছে। উদয়ন ফাউন্ডেশন দেশের এবং দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে আসছে এবং ভবিষ্যতে উদয়নের এই প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে ।

 উদয়নের অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে একটি হলো- “রাইটিং সেন্টার” । রাইটিং সেন্টার এর উদ্দেশ্য হলো দক্ষতার সাথে লিখার অভ্যাস গড়ে তোলা, যাতে করে কর্ম জীবনে সঠিক ভাবে যে কোন ধরনের ব্যবসায়ীক অথবা চাকুরীর প্রয়োজনে দেশ বিদেশের সাথে সৌহার্দপূর্ন যোগাযোগ স্থাপন ও প্রজেক্ট লিখতে সক্ষম হয়।  এছাড়া ও বিশুদ্ধ পানি পান করার জন্য দুস্থদের মাঝে Water Purifier বিতরন করা হয় । গর্ভবতী মায়েদের নির্যাতন এবং গর্ভাবস্থায় শিশু মৃত্যু হার কমানোর লক্ষে্য উদয়ন ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে।

এছাড়াও বাংলাদেশের যে কোন প্রতিকূল অবস্থাতে উদয়ন ফাউন্ডেশন পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। রানা প্লাজা ধ্বংসের পর উদয়ন ফাউন্ডেশন নগদ অর্থ সহ বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করেছে।
 উদয়ন ফাউন্ডেশন বহুল আলোচিত শিশু রবিউল ইসলাম শান্তকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে এসে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে উদারতার পরিচয় দেয়।

 উদয়নের সহযোগিতায় মিরশসরাই থানার (চট্রগ্রাম জেলা)  অর্ন্তগত বারইয়ার হাট পৌরসভায়  এবং ছাগলনাইয়া থানার (ফেনী জেলা) অর্ন্তগত উত্তর মন্দিয়ায়  ২টি এতিমখানা পরিচালনা করছে।

উদয়নের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মধ্যে, কুতুব উদ্দিন দূর্লভ (কান্ট্রি চিপ), রাদিয়ান রাহাব (ডাইরেক্টর অব গ্লোবাল ওপারেশন), পলাশ চৌধুরী (জেনারেল সেক্রেটারি), মেহেনাজ চৌধুরী (ডাইরেক্টর অব ওম্যান এডুকেশন এমপাওয়ারমেন্ট) অন্যতম।

 স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে আপনাকেও শামিল করতে চায় একজন রেদোয়ান চৌধুরী। জনাব! আপনাকেই বলছি। আসুন না, একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই, সুন্দর সমাজ গড়তে শামিল করি নিজেকে।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত