আর্কাডিয়ায় বাড়িতে অনুপ্রবেশকারীর গুলিতে ৬১ বছর বয়সী পিতার মৃত্যু; সন্দেহভাজন পলাতক
ওদের কারও পা অবশ কারও ভেঙে গেছে খুলির হাড়
পুলিশি হামলায় আহত বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির তিন ছাত্রী স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন।
পুলিশি হামলায় আহত বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) তিন ছাত্রী স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন। শামীমা আহমেদ অলি, সুরাইয়া নাসরিন ও আঁখি নূর মলি্লক নামে ওই তিন ছাত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের কেউ দুই পা, কেউ হাত নাড়াতে পারছেন না। কারও মাথার খুলির হাড় ভেঙে গেছে। বরিশালে চিকিৎসাধীন এক ছাত্রী মা হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানা গেছে।ওদের কারও পা অবশ কারও ভেঙে গেছে খুলির হাড়
৩ ডিসেম্বর ১০ দফা দাবি আদায়ে বরিশালে আন্দোলনরত আইএইচটি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে পুলিশ। এতে ওই তিন ছাত্রীসহ অন্তত ৫০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছিলেন। প্রথমে তাদের বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ৬ ডিসেম্বর সেখান থেকে তাদের ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত তিন ছাত্রীর অভিযোগ, পুরুষ পুলিশ সদস্যরা রাজপথে প্রকাশ্যে ছাত্রীদের ওপর যেভাবে হামলা চালিয়েছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। নারী পুলিশ থাকতেও পুরুষ পুলিশ সদস্যরা ছাত্রীদের টেনেহিঁচড়ে মারধর করেছে। এই হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তারা।
গতকাল শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ওই তিন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়। শামীমা আহমেদ অলি জানান, ৬ ডিসেম্বর সকালে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢামেক হাসপাতালে তাকে রেফার করা হয়। ওইদিন রাতেই তিনি ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি হন। তার দুই পায়ে কোনো বোধশক্তি নেই। ঢামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ডা. কামরুল হাসান সমকালকে বলেন, প্রচণ্ড আঘাতের কারণে অলির পা অবশ হয়ে আছে। দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসায় এটি সেরে উঠবে।
আইএইচটির ফিজিওথেরাপি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুরাইয়া নাসরিন বলেন, পুলিশ সদস্যরা রাইফেলের বাঁট দিয়ে তার পিঠে আঘাত এবং বুট দিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি মেরেছে। তিনি মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছেন। পাশাপাশি বাম পা নাড়াতে পারছেন না। ডেন্টাল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আঁখি নুর মলি্লকের মাথায় প্রচণ্ড যন্ত্রণা করে এবং বাম হাত নাড়াতে পারেন না। চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন, মাথার স্ক্যালের একটি হাড় ভেঙে গেছে।
বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমটিএ) সাবেক মহাসচিব সেলিম ভূঁইয়া এবং ঢাকা মহানগর সভাপতি আ স ম আবদুর রব খান শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) গোলাম রউফ খান বলেন, প্রথমে মনে হয়েছিল পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে। পরে পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা ছোটাছুটি করতে গিয়ে আহত হয়েছেন।পুলিশ সদস্যরা বুট দিয়ে ছাত্রীদের গায়ে লাথি মারছেন- এমন ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তাহলে পুলিশ সদস্যরা ছাত্রীদের ওপর হামলা করেনি বিষয়টি কতটুকু সত্য- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্রীদের শরীর এবং পুলিশের বুটের দূরত্ব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ওই আঘাত কারও শরীরে লাগেনি। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে কিছু লাঠিচার্জ করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
ছাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত আখ্যায়িত করে বরিশাল আইএইচটির অধ্যক্ষ কুমুদরঞ্জন বালা গন্ণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশি হামলার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির কাজ চলছে।
শেয়ার করুন