ইন্টারনেট যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন মানবাধিকার লংঘনের ন্যায়
সাধারণ মানুষের ইন্টারনেট যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া মানবাধিকার লংঘনের স্বরূপ বলে মনে করেন নারী উদ্যোক্তারা। তাদের মতে, সাধারণ মানুষের ইন্টারনেট যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন, চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে প্রতিটি পেশাগত ক্ষেত্রে, জীবন-জীবিকা বিশেষত গ্লোবাল ই-কমার্স, ফ্রিল্যান্সিং, ইত্যাদির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) ইন্টারনেট শাটডাউন বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ভয়েস’ আয়োজিত আলোচনা সভায় এমনটাই জানান অংশগ্রহণকারীরা। এ সময় তারা ইন্টারনেট শাটডাউন এবং ব্যবসা ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সভায় নারী উদ্যোক্তারা ইন্টারনেট শাটডাউনে তাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে আর্থিক ক্ষতি, জীবন ও জীবিকায় এর কঠিন বাস্তবতার কথা তুলে ধরে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ইন্টারনেট শাটডাউন নিয়ে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার অভাব আছে যা আগামী দিনগুলোতে তাদের জন্য আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। অন্যদিকে, সরকারের আন্তরিকতা, সুষ্ঠু আইন প্রণয়ন এবং ইন্টারনেট শাটডাউনের সম্ভাব্যতা উদয় হলে আগে থেকে ঘোষণা দেয়ার মত উদ্যোগ নেয়া হলে, ব্যবসা ক্ষেত্রে অতীতে যে বিশাল ক্ষতি হয়েছে, তা অনেকাংশে কমে আসবে বলে তারা মনে করেন।
তাদের মতে, ইন্টারনেটে মানুষের প্রবেশাধিকার যদি সাময়িক সময়ের জন্য হলেও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তবে তা সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ব্যবসা, চিকিৎসা, শিক্ষা, বিনোদন ও মতপ্রকাশের অধিকারসহ, প্রায় সকল বিষয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মতবিরোধ ও সংকটকালে, নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাহত হলে অনলাইন যোগাযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হয় যাতে সার্বিক অর্থনীতিতে চরম সংকটের সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত বাণিজ্যিক ক্ষেত্রগুলো পিছিয়ে পরছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের গ্রহণ যোগ্যতা হারাচ্ছে। সেইসাথে ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং, অনলাইন বাণিজ্যিক পরিসরসহ আমদানি ও রপ্তানিক্ষেত্রগুলো।
সভায় উপস্থিত বক্তাদের মধ্যে, রেজওয়ান ইসলাম (কনসালট্যান্ট, এংগেজ মিডিয়া), বলেন, ইন্টারনেট শাটডাউনে আর্থিক ক্ষতি নির্ণয়কারী ওয়েবসাইট - নেটব্লকের হিসাব অনুসারে, ইন্টারনেট শাটডাউনের ফলে বাংলাদেশ একদিনে ৭.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতির মুখোমুখি হয়। তার আলোচনায় উঠে আছে কিভাবে বিভিন্ন বাস্তবিক ও বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপ নিয়ে আগামীতে এই ক্ষতি মোকাবেলা করা সম্ভব।
এছাড়া, আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ। তিনি বলেন, যে সব ক্ষুদ্র এবং মধ্যম পরিসরের উদ্যোক্তারা অনলাইন বা ফেসবুকের উপর নির্ভরশীল, গত জুলাই-অগাস্ট মাসের লাগাতার ইন্টারনেট শাটডাউনে, তারা অধিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন । সেই সাথে আউটসোর্সিং সেক্টরেও ধ্বস নেমেছে।’
ভয়েসের উপ-পরিচালক, মুশাররাত মাহেরা, জাতীয় মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি বা গ্রোস ডমেস্টিক প্রডাক্ট) বেসরকারী খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার অনবদ্য ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, দেশের সার্বিক আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, আমাদের সবাইকে এক যোগে ইন্টারনেট শাটডাউনের নেতিবাচক প্রভাব ঠেকাতে এগিয়ে আসতে হবে\
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন