দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পক্ষে বিবৃতি দেওয়ায় অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সমালোচনা
দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পক্ষে বিবৃতি দেওয়ায় অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সমালোচনা করে ঢাকা-৮ আসনের এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, কখনো কখনো আমরা দেখতে পাই, যখন কোনো সরকারি বা বেসরকারি, আধা সরকারি কিংবা সংস্থা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিশেষ কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসে, তখন ওই গোষ্ঠী বা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুর্নীতিবাজের পক্ষে সাফাই বক্তব্য, বিবৃতি প্রদান করে। প্রকারান্তরে বিশেষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের দায় কিন্তু ওই সংস্থাগুলো গ্রহণ করে। পুরো সংস্থার ওপর চলে আসে এ দায়। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা বেসরকারি যে কোনো দলের বা সংস্থার হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিকে বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, যখন কোনো রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অপকর্মের অভিযোগ আসে, তখন রাজনীতিবিদেরা পদক্ষেপ নেয় বা পক্ষ নেয় না। বরং রাজনৈতিক পদক্ষেপ ও আইনি বিচারে সোচ্চার হয়। এটাই হলো সৎ রাজনীতিবিদদের মহত্ত্ব।
রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দুর্নীতি প্রসঙ্গ টেনে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, যারা রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে থাকেন, যেমন মতিউরকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), গণমাধ্যম, এমনকি আমরা যারা রাজনীতিবিদ আছি তারা চিহ্নিত করতে পারিনি। তাকে একটি বোবা প্রাণী ছাগল চিহ্নিত করেছে। এমন মতিউর আরও আছে কি না, যাদের ভবিষ্যতে ছাগল বা অন্য কোনো বোবা প্রাণী চিহ্নিত করার আগে তাদের চিহ্নিত করার প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সংস্থার।
তিনি আরও বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে, সে ক্ষেত্রে তারা যেন এ বোবা ছাগলের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে কথা বলা, বিবৃতি দেওয়া, প্রকারান্তরে দুর্নীতিবাজ কোনো ব্যক্তিকে রক্ষার নামে তাদের সংস্থার সবার ওপর দায়ভার না চাপায় সেদিকে সবার সজাগ থাকা প্রয়োজন।
ঋণখেলাপি, অর্থ পাচারকারী, ব্যাংক লুটেরা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট যারা করে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের তালিকা প্রণয়ন করে জাতির সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে এই দুষ্টচক্র, সর্বগ্রাসী, স্বার্থান্বেষী চক্রের হাত থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে, বলেন নাসিম।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি গণমাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়ে অনুসন্ধানমূলক ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এগুলোকে অতিরঞ্জিত, আংশিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে বিবৃতি দেয় বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন-বিপিএসএ। রিপোর্ট প্রকাশে আরও সতর্ক হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।
পুলিশের এই বিবৃতিকে সাম্প্রতিক সময়ে ফাঁস হওয়া সাবেক শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর একাংশের দুর্নীতির সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেছে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন