ঈদুল আজহার খুশির বাতাস বইতে শুরু করেছে দোড়গোড়ায়
ঈদুল আজহার খুশির বাতাস বইতে শুরু করেছে দোড়গোড়ায়। ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বীবিত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা প্রিয় পশু কোরবানির মাধ্যমে ঈদের দিনটি উদযাপন করেন। আর ঈদের দিনের উৎসবকে রঙিন করে তোলে নতুন জামা-জুতা। যদিও ঈদুল আজহায় সবাই কোরবানি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এই ঈদে পোশাক নিয়ে খুব বেশি হইচই থাকে না। এছাড়া জমকালো পোশাকও তেমন কেনা হয়না। তাছাড়া পোশাক উপহার হিসাবে দেওয়া নেওয়াটাও কম হয়।
কিন্তু উৎসব বলে কথা। একটি-দু’টি নতুন পোশাকের জন্য তো মন কেমন করতেই পারে! তবুও ঈদের দিনটির পোশাক কেমন হবে তা নিয়ে একটু ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়াই ভালো। এই ঈদে পোশাকের ক্ষেত্রে মাথায় রাখুন এই বিষয়গুলো:
কেমন কাপড়
পোশাকের ক্ষেত্রে এর কাপড় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই দেখে পছন্দ হলেই কিনে ফেলবেন না। বরং খেয়াল করে দেখুন পোশাকের কাপড়টি এই আবহাওয়ার জন্য উপযুক্ত কি না। যেমন ধরুন, শীতের উপযোগী পোশাক কিন্তু আপনি এখন পরতে পারবেন না। বর্ষাকাল হলেও আবহাওয়া যথেষ্ট গরম থাকছে।
গরমের দিনে পোশাকের ক্ষেত্রে সবচেয়ে মানানসই হলো সুতি কাপড়। এতে গরম কম লাগবে। সেই সঙ্গে পাবেন আরামও। এতে সারাদিনের ঘোরাফেরায় মোটেই অস্বস্তি লাগবে না। সুতি কাপড়ের পাশাপাশি লিনেন, ধুপিয়ান, ভয়েল, মসলিন, চিকেন ও তাঁতের কাপড় গরমের জন্য উপযোগী। যেহেতু উৎসব, তাই এর আমেজও ধরে রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে পরতে পারেন কৃত্রিম মসলিন বা পাতলা চোষা কাতান।
পোশাকের রং নির্বাচন
যাদের খুব বেশি ঘেমে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, তাদের অনেক সময় জামা ঘামে ভিজে ওঠে। তাই গরমে পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে কাপড়ের মতোই গুরুত্বপূর্ণ রং। শীতে যেমন খুশি তেমন রঙের কাপড় পরা গেলেও গরমে তা চলবে না। এ সময় সাদা, হালকা গোলাপি, আকাশি, হালকা হলুদ, ধূসর, হালকা বেগুনি, হালকা নীল, বাদামিসহ হালকা রঙের পোশাক বেছে নিন। এ ছাড়া যে রঙের পোশাকে ঘামের দাগ স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সেসব রং এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
স্বস্তি ও আরামদায়ক পোশাক
পোশাক ব্যবহারের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো স্বস্তি। যে পোশাক আপনাকে অস্বস্তি দেবে, সেটি পরে নিশ্চয়ই বেশি সময় থাকতে পারবেন না। এ সময় খুব বেশি টাইট ফিটিংস পোশাক পরলে সেটি অস্বস্তিকর হবে। তাই একটু ঢিলেঢালা পোশাক বেছে নিন। হাইনেকের বদলে কলার ছাড়া গলার জামা পরতে পারেন। এতে আরাম পাবেন। হাতা ছোট হলেই ভালো। গরমে ফুল স্লিভ বা থ্রি কোয়ার্টার খুব একটা আরাম দেবে না। এ ছাড়া পোশাকের ভেতরে অনেকেই ইনার পরেন।
শিশুদের পোশাক
ছোটদের বেলায় সব ঈদ মানেইতো নতুন পোশাক। যেহেতু চলছে গরমকাল তাই শিশুর জন্য আরামদায়ক পোশাক কিনতে হবে। অনেক পোশাক আছে, যেগুলো দেখতে সুন্দর কিন্তু মেটেরিয়াল ভালো নয়, আবার শিশুর জন্যও উপযোগী নয়।
এমন পোশাক পরলে শিশুরা অস্বস্তিবোধ করে থাকে। সেদিকে নজর রেখে তবেই শিশুর ঈদের পোশাক নির্বাচন করতে হবে। শিশুর পোশাকে কেউ গুরুত্ব দেন নকশা আর ফ্যাশন ট্রেন্ডে, আবার কারও বিবেচনায় থাকে শিশুর স্বস্তি ও পোশাকের রঙে। তবে শিশুর পছন্দকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
শাড়ি নির্বাচন
গরমে স্বস্তি পেতে হালকা রঙের শাড়ি যেমন সুতির ব্লক, টাঙ্গাইলের শাড়ি, অ্যাপ্লিকের শাড়ি, ছাপা শাড়ি, ব্লক-বাটিকের সুতি ট্রেন্ডি শাড়ি অথবা পাতলা সাটিন বা জর্জেটের শাড়িও উপযোগী।
ছেলেদের পোশাক নির্বাচন
ঈদে ছেলেদের পোশাকের ক্ষেত্রেও সুতি কাপড়কে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এই কাপড়ের পাঞ্জাবি, শার্ট, ফতুয়া কিনতে পাবেন। বাটিক, ভেজিটেবল ডাই, টাইডাই, স্ক্রিনপ্রিন্ট, ব্লক ইত্যাদির ডিজাইন করা পোশাক পাওয়া যায় সহজেই। এ সময় ফর্মালের বদলে কিনুন ক্যাজুয়াল শার্ট।
এগুলো গরমে আরামদায়ক ও ফ্যাশনেবল। ফুল হাতার বদলে হাফ হাতার শার্ট পরতে পারেন। পোশাকের রং হিসেবে বেছে নিতে পারেন হালকা নীল, ধূসর, সাদা, অফহোয়াইট, অলিভ ঈত্যাদি। ঈদের নামাজ কিংবা দাওয়াতের জন্য এ সময় সুতির পাঞ্জাবিই ভালো। এ ছাড়া গরমে স্পোর্টস টি-শার্ট পরেন অনেকেই। এসব টি-শার্টে এমন ফ্যাব্রিক ব্যবহার করা হয়, যা খুব সহজে ঘাম ত্বকের উপরিভাগে নিয়ে আসে। ফলে ঘাম শরীরে বসে না। গরমে এই ধরনের পোশাক পরতেই পারেন।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন