রমজানেও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তীব্র পানিসংকট
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র পানিসংকট। রমজানের প্রথম দিন থেকে বিশুদ্ধ পানি ও ব্যবহারের পানি না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে দিন পার করছে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। একাধিকবার ওয়াসাকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা। এদিকে ওয়াসা বলছে, রাজধানীতে প্রতিদিন ২১০ থেকে ২৫০ কোটি লিটার পানির চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে ওয়াসার উত্পাদন ক্ষমতা ২৭০ কোটি লিটার। ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী পানির চাহিদার বিপরীতে বেশি পানি উত্পাদন হলেও কেন পানির সংকট দেখা দিচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন নাগরিকদের।
জানা যায়, রাজধানীর ফকিরাপুলের মেইন গলি, গরম পানির গলিতে ১০ থেকে ১২ দিন যাবৎ পানি পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। ঐ এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. সাইফুদ্দীন বলেন, প্রতিদিন গাড়িতে করে কিছু পানি দেওয়া হচ্ছে আমাদের। কিন্তু এই সামান্য গাড়ির পানি দিয়ে তো আমাদের এতগুলো বাড়ির ব্যবহারের পানিও হচ্ছে না। এভাবে পানি সংকট নিয়েই আমাদের প্রতিদিন চলতে হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ দেখছি না। অন্যদিকে দক্ষিণ মান্ডার আল হেরা মসজিদের গলিতেও একই অবস্থা। এখানেও রমজানের প্রথম দিন থেকেই পানি পাচ্ছে না এলাকার মানুষ। প্রায় শতাধিক বাড়িতে পানির জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে।
এখানকার বাসিন্দা আব্দুল মতিন জানান, একাধিকবার ওয়াসাকে এ বিষয়ে জানালেও কোনো ধরনের প্রতিকার পাচ্ছি না। ওয়াসা থেকে লোকজন এসে দেখে যাচ্ছে, কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। মানিকনগর এলাকায়ও পানির চাপ নেই বলে জানান এ এলাকার বাসিন্দারা। এই এলাকার বাসিন্দা রেজাউল হক জানান, সারা দিনে দুই-তিন ঘণ্টাও পানি থাকছে না। রমজান আসার সঙ্গে সঙ্গে পানির সংকট আরো বেড়েছে।
এছাড়া পানি সংকট রয়েছে মিরপুর এলাকাতেও। মিরপুরের কাজীপাড়া, পীরেরবাগ, রূপনগর আবাসিক এলাকায় দীর্ঘদিন পানির সংকট পার করছে এলাকাবাসী।
এলাকার বাসিন্দা নিজাম উদ্দিন বলেন, পানি কিছুদিন থাকে আবার কিছুদিন পানিশূন্য থাকে এলাকা। তখন ওয়াসাকে জানালে তারা পানির গাড়ি পাঠায়। এভাবে তো সমস্যার সমাধান হয় না। ভোগান্তির শেষই হচ্ছে না। এছাড়া উত্তরখান এলাকায়ও রয়েছে পানির সংকট। আবার কিছু কিছু এলাকায় পানি থাকলেও সেসব পানির মধ্যে রয়েছে ময়লা। শুধু এখানেই নয়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পানিতেও দুর্গন্ধ ও ময়লা আসার অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী।
মো. মিঠু নামে উত্তরখানের এক বাসিন্দা জানান, ওয়াসার পানির সংকট চারদিকে। আগে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি পেলেও এখন পানিও পাচ্ছি না। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও ব্যাহত হচ্ছে।
এবিষয়ে জানার জন্য মানিকনগর, মান্ডা এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়াসার মোডস জোন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আল আমিনকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে ওয়াসার ব্যবস্হাপনা পরিচালক এ কে এম শহীদ উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে যেসব এলাকা থেকেই ফোন আসছে আমরা তাত্ক্ষণিক সেসব এলাকায় পানির ব্যবস্হা করছি। তবে পানির পাইপে কিছু জায়গায় সমস্যার কারণে হয়তো পানি পাচ্ছে না। খুব শিগ্গিরই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তবে তিনি গত সপ্তাহে প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বলেন, একটি অপরিকল্পিত শহরে পরিকল্পিত পানি ব্যবস্হা করা খুবই কঠিন। যেখানে শহরের লোক সংখ্যাই জানা যায় না, সেখানে কীভাবে সঠিক পরিকল্পনা করব আমরা। তারপরেও আমরা সবার জন্য পানির ব্যবস্হা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/বি
[এলএ বাংলাটাইমসের সব নিউজ আরও সহজভাবে পেতে ‘প্লে-স্টোর’ অথবা ‘আই স্টোর’ থেকে ডাউনলোড করুন আমাদের মোবাইল এপ।]
শেয়ার করুন