ম্যারিলান্ডে সুনীল গোমেজ হত্যার প্রতিবাদ সভা
বাংলাদেশে
চলমান সংখ্যালঘু হত্যা , নির্যাতন, ডাকাতি, জমি দখল ও হত্যার হুমকি
অসাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় উদ্ব্যেগ প্রকাশ করেছে ম্যারিল্যান্ড প্রবাসী
নেতৃবৃন্দ। প্রতিবাদ এ সমাবেশে উক্ত স্টেটে বসবাসরত সকল পেশার মানুষ সুনীল
গোমেজ হত্যার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি
জানান। সেই সাথে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবনের নিরাপত্তা বিধানে সরকারের
দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
গত ১০ জুন স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭ ঘটিকায় বিসিসিএস
সোসাইটি অফিস প্রাঙ্গনে এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভিবিন্ন
সামাজিক, সাহিত্যিক ও অর্থনৈতিক সংঘঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তবি প্রদান করেন।
বিপুল এলিট গনছালোভেস এর সঞ্চালনে সভায় সভাপতিত্ব করেন , সেন্টু ফুলজেন্স
রোজারিও। শুরুতে তিনি বলেন, বাংলাদেশে একের পর এক ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর
নির্যাতন, হুমকি ও হত্যার পরিমান বেড়ে যাচ্ছে। সেই সাথে বেড়ে যাচ্ছে ধর্মীয়
উন্মাদনা। তিনি বলেন, আমাদের ভাই-বোন আত্মীয় -স্বজন দেশে আজ চরম
নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। এ মতাবস্থায় আমরা চুপ করে বসে থাকতে পরিন।
তিনি তার বক্তব্যে সাম্প্রতিক সুনীল গোমেজ হত্যা, সাভারের খ্রিষ্টান
সম্প্রদায়ের ভোটারদের উপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের
গ্রেফতারের দাবি জানান।
সুবীর কাস্মীর পেরেরা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ও
অধিকারের দেয়া মানবাধিকার লঙ্গঘনের চিত্র নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন
করেন। প্রতিবেদনে বগত বছরে(২০১৫) ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর
অত্যাচার-নির্যাতন, ধর্ষণ, ডাকাতি সহ নানা ঘটনার পরিসংখ্যান তলে ধরেন। সেই
সাথে ২০১৬ সালে ঘটে যাওয়ার অমানবিক ও পাশবিক ঘটনার বিবরণ সবার সামনে
উপস্থাপন করেন।
বিশিষ্ট সমাজ নেতা সুবাস আব্রাহাম ডি'কস্তা বলেন, তথ্য়
মূলক একটি প্রতিবেদন আমরা হাতে পেলাম। এই তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের এগিয়ে
যেতে হবে। সেই সাথে তিনি চলমান ঘটনার নিন্দা জ্ঞাপন করেন।
সমাজ নেতা
পোলো পরি রোজারিও বলেন , একটি স্মারকলিপি তৈরী করে বাংলাদেশ দুতাবাস,
বাংলাদেশ ককাসের চেয়ারম্যান ও স্ট্রেট ডিপার্টমেন্ট জমা দিতে হবে।
আলবার্ট
ডেনিস রিবেরু(মাষ্টার) বলেন, আমাদের একটি বৈধ ব্যানারের আলোকে এগিয়ে যেতে
হবে। এখনই উপযুক্ত সময় প্রতিবাদের। তিনি স্থানীয় সংঘঠনের নেতৃবৃন্দদের
উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা এগিয়ে যান, আমরা সবাই আপনাদের সাথে আছি।
বিসিসিএস
এর প্রেসিডেন্ট ও যুব নেতা বাবলু ডি'কস্তা বলেন, আমরা প্রথমবারের মত
সংখ্যালঘুদের বিষয় নিয়ে এখানে বসেছি। এটাই শেষ নয়, আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
এই প্রতিবাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে তিনি বলেন , আমরা সব সময় আপনাদের পাশে
আছি।
বাংলাদেশ খ্রিষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মাইকেল খোকন রোজারিও
বলেন, আমাদের আরো সচেতন হতে হবে। যে কোন মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে আমরা
আগেও ছিলাম এখনো আছি।
বাঙালি- আমেরিকান খ্রিষ্টান এসোসিয়েশনের(বাকা)
সহ-সভাপতি বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের একটি প্রতিবাদ মিছিল করতে হবে।
হোয়াট হাইজের সামনে প্রবাদ জানাতে হবে।
ভাওয়াল মিলন-মেলা উদযাপন কমিটির
আহবায়ক হেনরি রোজারিও বলেন, আজ নাটোরে হয়েছে, কাল আমার বাড়িতে হবে না এমন
নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারি না। তাই আসুন আমরা উচ্চ পর্যায়ে প্রতিবাদ জানাই।
শীতল ডমিনিক গোমেজ বলেন, আমরা সুনীল হত্যার প্রতিকার চাই। তিনি স্পিকারের বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের আহবান জানান।
মিলন
রদ্রিক্স বলেন, এই প্রতিবাদ সভাউ এসে অনেক ঘটনার কথা জানতে পারলাম। তিনি
আতঙ্কিত হয়ে বলেন, এখনই প্রতিবাদ না জানালে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
যুব নেতা জোসেফ বাবলু গোমেজ বলেন, আজকের সভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ব্যানার সহকারে ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রতিবাদ জানাতে হবে।
সুবোধ
রোজারিও বলেন , যেকোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রবাসীরা এগিয়ে না আসলে দেশের
সংখ্যালঘুরা দিনে দিনে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এই জন্য চাই আরো জোড়ালো
প্রতিবাদ।
যুব নেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলবার্ট গোমেজ বলেন, অতি শীঘ্র আরো একিটি পরিবাদ সভার আয়োজন করে সারা বিশ্ব জানিয়ে দিতে হবে।
সহতী
ও সাংকৃতিক ফোরামের নেত্রী কবি রুবি মার্গারেট রোজারিও বলেন, আন্দোলনের
পাশাপাশি আমাদের কলম ধরতে হবে। আমাদের লেখার মাধ্যমে সংখ্যালঘু নির্যাতনের
চিত্র তুলে ধরে প্রতিবাদ জানাতে হবে।
যেরম পবিত্র রোজারিও যুব নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, আমাদের চোখ-কান খোলা রেখে প্রতি পদক্ষেপ নিতে হবে।
সমাবেশে বিভিন্ন সংঘঠনের নেতা ও সমাজের গন্যমানি ব্যক্তিসহ মোট ২৭ উক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভা
শেষে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই সাথে কমিটির সদস্য/সদস্য হলেন, সেন্টু
ফুলজেন্স রোজারিও, সুবাস আব্রাহাম ডি'কস্তা, যেরম পবিত্র রোজারিও, পল পরি
রোজারিও, ডেনিস আলবার্ট রিবেরু ( মাষ্টার), বাবলু কস্তা, মাইকেল খোকন
রোজারিও, ড উইলিয়াম প্রকাশ গোমেজ ,স্ট্যানলি খোকন রোজারিও, সুবোধ আর্থার
রোজারিও, বিপুল এলিট গনছাল্ভেস, সুবীর কাস্মির পেরেরা, হেরি গোমেজ,রুবি
র্গারেট রোজারিও এবং ভাওয়াল,সুহৃদ সংঘ, ইছামতি, বাকা, বিসিএ সহ
ম্যারিল্যান্ডের সকল সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংগঠনের সভাপতি ও সেক্রেটারি উক্ত
কমিটির আওতাভুক্ত।
উক্ত কমিটি আগামী কয়েকদিনের মধ্য সভা আহবান করবে।
শেষে সভাপতি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এলএবাংলাটাইমস/এলএ/এলআরটি
শেয়ার করুন