অ্যাপেল বাগানে কাজ করা থেকে শুরু করে এখন সিটি কাউন্সিলের সদস্য হওয়া — বেটি মার্টিনেজ-ফ্রাঙ্কোর জীবনে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত চলছে। তিনি ইরভাইনের ডিস্ট্রিক্ট ৫ এর বিশেষ নির্বাচনে এগিয়ে থেকে শহরের প্রথম লাতিনা কাউন্সিলওম্যান হওয়ার পথে রয়েছেন।
“আমি এই সুযোগে ভীষণ উচ্ছ্বসিত। নিজেকে খুবই বিনম্র মনে হচ্ছে। এখনও মাঝে মাঝে মনে হয়, আমি এটা কীভাবে করলাম?” বলেন মার্টিনেজ-ফ্রাঙ্কো।
শুক্রবারের অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে দেখা গেছে, তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে সাত শতাংশের বেশি ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন।
“নানান অভিজ্ঞতা এবং ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে কেউ কাউন্সিলে এলে, নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখতে পারে,” বলেন তিনি।
তাঁর এই পথচলা শুরু হয় তিন দশকেরও বেশি আগে, যখন তিনি তাঁর প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে মেক্সিকো থেকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন।
“যে স্বপ্ন প্রতিটি অভিবাসীর থাকে — একটা ভালো জীবনের — সেই স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু শুরুটা খুব সহজ ছিল না,” বলেন মার্টিনেজ-ফ্রাঙ্কো।
ওয়াশিংটন স্টেটে ফল বাগানে কাজ করেছেন তিনি। সেই সময়কার একটি ছবি তিনি শেয়ার করেন, যেখানে দেখা যায় তিনি তাঁর মেয়েদের দেখাচ্ছেন সেই শুরুদিনের গল্প।
পরবর্তীতে তিনি একটি সহিংস দাম্পত্য সম্পর্ক থেকে পালিয়ে আসেন, দুই মেয়েকে নিয়ে একা হয়ে পড়েন।
“একটা নতুন দেশে, ভাষাটা ভালো করে না জেনে, দুই মেয়েকে নিয়ে নিজেকে সামলাতে হয়েছে,” বলেন তিনি।
শেল্টার থেকে শেল্টারে ঘুরে শেষমেশ হিউম্যান অপশনস নামের একটি এনজিও তাঁর পরিবারকে সেকশন ৮ হাউজিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে ইরভাইনে একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকার সুযোগ করে দেয়।
হাউজকিপিং, চাইল্ড কেয়ার, যেখানেই কাজ মিলেছে, সেখানেই কাজ করেছেন তিনি।
“যেদিন গ্রিন কার্ড পেলাম, সেদিনই আমি অরেঞ্জ কোস্ট কলেজে ভর্তি হই। আমার লক্ষ্য ছিল সরকারি সহায়তা ছেড়ে আমার মেয়েদের জন্য একটা ভালো জীবন গড়া,” বলেন মার্টিনেজ-ফ্রাঙ্কো।
তিনি USC থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পাশাপাশি তিনি নিজের একটি পাবলিক রিলেশনস এজেন্সি চালু করেন এবং আমেরিকার নাগরিক হন।
তাঁর এই সাহসী ও অনুপ্রেরণামূলক যাত্রা তাঁকে নিয়ে এসেছে সেই কমিউনিটির সেবায়, যে কমিউনিটি একসময় তাঁকে সহায়তা করেছিল।
“আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না। আমি আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলছিলাম, তিনি বললেন, ‘বেটি, মনে রাখো, মেক্সিকোতে তুমি একজন নেতা ছিলে। গার্হস্থ্য সহিংসতার পর তুমি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলে। এখন তুমি আবার নিজেকে গড়ে তুলছো — সম্পূর্ণ একজন মানুষ হয়ে উঠছো।’”
মার্টিনেজ-ফ্রাঙ্কো জানিয়েছেন, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তাঁর মেয়েরা এবং নাতি-নাতনিরা উপস্থিত থাকবে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
এলএবাংলাটাইমস/ওএম