আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের বিচারক এপির সাংবাদিকদের হোয়াইট হাউসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে দিলেন

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) সাংবাদিকদের হোয়াইট হাউসে প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। ‘গালফ অব মেক্সিকো’ লেখা হবে, নাকি ট্রাম্পের ‘গালফ অব আমেরিকা’—এ নিয়ে বিরোধের সূত্র ধরে বার্তা সংস্থা এপির সাংবাদিকদের হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এর বিরুদ্ধে আদালতে গেছে এপি। গতকাল মঙ্গলবার ডিস্ট্রিক্ট বিচারক ট্রেভোর ম্যাকফাডেন তাঁর আদেশে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন এপির সাংবাদিকদের ওপর যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, সংবিধানে বাক্‌স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া আছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে ‘গালফ অব মেক্সিকো’র নাম পরিবর্তন করে ‘গালফ অব আমেরিকা’ রেখেছেন। কিন্তু এপি তাদের সংবাদে ‘গালফ অব আমেরিকা’ লিখতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপরই এপির সাংবাদিকদের হোয়াইট হাউসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। মঙ্গলবার ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বলেছেন বিচারক ম্যাকফাডেন। তবে এই আদেশ বাস্তবায়ন আগামী রোববার পর্যন্ত স্থগিত করেছেন তিনি। এ সময়ের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের আইনজীবীরা আপিল করার সুযোগ পাবেন। ট্রাম্প নিজের প্রথম মেয়াদে ম্যাকফাডেনকে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। ম্যাকফাডেন তাঁর আদেশে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী এই আদালত খুব সাধারণভাবে বিশ্বাস করে, যদি সরকার কিছু সাংবাদিকের জন্য তার দরবার খোলা রাখে, সেটা হতে পারে ওভাল অফিস, ইস্ট রুম অথবা অন্য কোথাও, তাহলে শুধু ভিন্ন মতাদর্শের কারণে অন্য সাংবাদিকদের জন্য সরকার নিজের দরজা বন্ধ রাখতে পারে না। সংবিধান সে অধিকার দেয় না।’ এপি বলেছে, শুধু তাদের ভাষার সঙ্গে একমত হতে না পেরে হোয়াইট হাউসে তাদের প্রবেশাধিকারে বাধা দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন তাদের বাক্‌স্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকারকে লঙ্ঘন করেছে। হোয়াইট হাউসে প্রবেশাধিকার ফিরে পেতে এপি আদালতে যাওয়ার পর ফেব্রুয়ারিতে বিচারপতি ম্যাকফাডেন তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো আদেশ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। মঙ্গলবারের রায়ের পর এপির মুখপাত্র লরেন ইস্টন বলেছেন, তাঁরা আদালতের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট। এক বিবৃতিতে ইস্টন আরও বলেন, ‘আজকের (মঙ্গলবারের) রায় সরকারের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ভয় ছাড়াই সংবাদমাধ্যম ও জনসাধারণের স্বাধীনভাবে কথা বলার মৌলিক অধিকারকে নিশ্চিত করেছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের অধীন আমেরিকার সব নাগরিকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা।’ জানুয়ারিতে শপথ গ্রহণ করার কয়েক দিনের মধ্যে ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে ‘গালফ অব মেক্সিকো’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘গালফ অব আমেরিকা’ করেন। কিন্তু এপি জানায়, ট্রাম্প প্রশাসনের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি জানার পরও তারা ‘গালফ অব মেক্সিকো’ ব্যবহার করে যাবে। জবাবে হোয়াইট হাউসে এপির সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
সূত্রঃ প্রথম আলো এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস