আন্তর্জাতিক

পৃথিবী ধ্বংসের আশংকায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন এক গ্রামবাসী

পৃথিবী একদিন ধ্বংস
হবে সেটি সবাই জানে। কিন্তু সেটি কবে তা কিকেও কখনও বলতে পারে? অথচ পৃথিবী ধ্বংসেরআশংকায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন ভারতেরমেঘালয়ের এক গ্রামবাসী।ভারতের মেঘালয় সেখানেই বছর কয়েক আগে একধর্মযাজকের বেশে কোনো এক ব্যক্তি হাজিরহয়েছিলেন। তিনি নাকি ভবিষ্যত বাণীকরেছিলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যেই পৃথিবী ধ্বংসহয়ে যাবে’, অবশ্য এমন গুঞ্জন আগেও শোনাগিয়েছিল অনেকবার। এবার সেই কথিতধর্মযাজকের এমন ভবিষ্যত বাণীর কারণেভারতের মেঘালয়ের এক গ্রামবাসী চাকরি বাপড়াশোনার মতো সব পার্থিব বিষয় বাদ দিয়েশুধুই মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।ওই কথিত ধর্মযাজক নাকি তাদের বুঝিয়েছেনযে, পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আগে সবকিছু হতেনিজেদের সরিয়ে রাখতে হবে। মেঘালয়েরপশ্চিম খাসি পর্বত জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম এটি।ওই কথিত ধর্মযাজক স্থানীয় আদিবাসীপরিবারগুলোকে বোঝান যে, পৃথিবীর ধ্বংসআসন্ন। তাই এখন সব জাগতিক বিষয় হতেনিজেদের সরিয়ে রাখা উচিত। ওই যাজকের এমনকথায় পরিবারগুলো এক রকম নিশ্চিত হয়ে একেএকে চাকরি বা কাজকর্ম হতে নিজেদের সরিয়েরেখেছেন। এমনকি বাচ্চাদের স্কুলে পড়াশোনাকরতেও তারা পাঠান না। আবার ব্যাংকে জমানোটাকা পয়সা তুলে ঘরে রেখে দিয়েছেন। অনেকবোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে, এটা অন্ধবিশ্বাস। কিন্তু কিছুতেই তারা বুঝতে চাইছেননা।ওই গ্রামটি যে মইরাং এলাকায় অবস্থিত,সেখানকার বিধায়ক মেতবাহ লিংদো বলেছেন,এই পরিবারগুলোর মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে যে,পৃথিবী ধ্বংস হতে চলেছে। আর তাই পৃথিবীরকোনো বিষয়েই এখন আর তাদের কোনো আগ্রহনেই। কেও একজন ধর্মযাজক সেজে এসে এইপরিবারগুলোকে ভুল বুঝিয়েছে। ধারণা করাহচ্ছে, সম্ভবত কোনো কায়েমি স্বার্থ এর পিছনেরয়েছে। তবে এই পরিবারগুলো যে শুধু ঘরে বন্দিহয়ে থাকে তা নয়, নিজেদের চাষের জমিতে যায়অথবা গ্রামের অন্যান্যদের সঙ্গেও কথাবার্তাবলেন।তবে একটি বিষয় হলো কারো কাছ হতে কোনো রকমজাগতিক বিষয়ে সাহায্য বা পরামর্শ নিতেতারা অস্বীকার করছে। গণবন্টন ব্যবস্থারখাদ্যশষ্য নেন না তারা, এমনকি নিজেদেরভোটার পরিচয়পত্রও নষ্ট করে ফেলেছেন। আবারগির্জাতেও যান না তারা।পশ্চিম খাসি পর্বত জেলার প্রশাসক এসখারলিংদো ওই ঘটনার কথা স্বীকার করেছেনবিবিসির কাছে। তবে এই ব্যাপারে সরকারেরকোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কিছু নেই বলেওজানিয়েছেন তিনি।বিধায়ক মেতবাহ লিংদো আরও বলেন, তিনি এইপরিবারগুলোর একজন সদস্যের সঙ্গে দেখাকরেছেন, অনেক বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছেযে এটা অন্ধ বিশ্বাস। কিন্তু তারা কিছুতেইবুঝতে চাইছেন না। তাদের বিশ্বাসের ব্যাপারেভীষণ একগুঁয়ে তারা। মনে হয় কিছুটা সময়দেওয়া দরকার এই পরিবারগুলোকে। নিজেরথেকেই এক সময় হয়তো তারা নিজেদের ভুল বুঝতেপারবেন এবং তখন তারা আবার স্বাভাবিকজীবনে ফিরে আসবেন।