ঢাকার রাস্তায় রিকশা চালান অমূল্য চন্দ্র বর্মণ (৪৫)। গত কয়েক দিনের অবরোধে আয়-রোজগারে ভাটা পড়ায় ফিরে যাচ্ছিলেন গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ে। সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিলেন সামান্য কিছু টাকা আর স্ত্রী-সন্তানের জন্য কেনা কিছু সামগ্রী। তবে অমূল্য চন্দ্র আর প্রিয়জনের কাছে ফিরতে পারেননি। তার আগেই গতকাল শনিবার রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় অবরোধের আগুনে দগ্ধ হয়েছেন তিনি। পুড়ে গেছে তার প্রিয় সন্তান ও স্ত্রীর জন্য কেনা সামগ্রীও।
অমূল্য চন্দ্র এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। শুধু অমূল্য চন্দ্র নন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধের আগুনে পুড়ে তার মতো আরও ৬ জন বার্ন ইউনিটে ছটফট করছেন। দগ্ধ অমূল্য চন্দ্র আরও কয়েকজন রিকশা চালকের সঙ্গে ঢাকার অদূরে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় একটি মেসে থাকতেন। তাদেরই একজন অনিল চন্দ্র ওই বাসে ছিলেন।অনিল চন্দ্র জানান, অমূল্যসহ তারা ৫ জন একই একই এলাকার। অবরোধে কাজকর্ম কম হওয়ায় সবাই মিলে একসঙ্গে বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ জন্য সায়েদাবাদ থেকে গাবতলীগামী রুটে চলাচলকারী একটি বাসে ওঠেন তারা। বাসটি ফার্মগেটে তেজগাঁও মহিলা কলেজের অদূরে ফুট ওভারব্রিজের নিচে যেতেই হঠাৎ আগুন ধরে যায়। সবাই বেরিয়ে আসতে পারলেও আগুনে পুড়ে যান অমূল্য।অনিল চন্দ্র আরও জানান, স্ত্রী রত্না রানী, ৩ ছেলে, প্রতিবন্ধী ছোট ভাই ও বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে অমূল্যর সংসার। পঞ্চগড়ে কাজের অভাব। তাই বছর তিনেক আগে কাজের সন্ধানে স্বজনদের ছেড়ে ঢাকায় এসেছিলেন। বাড়ি যাওয়ার পথে দগ্ধ হয়ে তিনি এখন মৃত্যুপথযাত্রী। যে স্বজনদের কাছে যাচ্ছিলেন অমূল্য চন্দ্র; গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তার দগ্ধ হওয়ার খবরই পাননি তারা। মেসের বন্ধু অনিলসহ আরও কয়েক সহকর্মী হাসপাতালে তাকে দেখাশোনা করছেন বলে বার্ন ইউনিটের কর্মীরা জানান।বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা জানান, অমূল্য চন্দ্রের শরীরের ১২ ভাগ পুড়ে গেছে। আক্রান্ত হয়েছে শ্বাসনালীও, যা উদ্বেগজনক। আরও সময় না যেতে এখনই তার বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।অমূল্যের বিছানার অদূরেই পোড়া যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন শরীরে সাদা ব্যান্ডেজ মোড়ানো যুবক আবুল কালাম আজাদ। পেশায় তিনি প্রাইভেটকার চালক। শুক্রবার রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় প্রাইভেটকারের সঙ্গে পুড়েছে আজাদের শরীরের ৩৩ শতাংশ। রক্ষা হয়নি শ্বাসনালীও।আবুল কালামের গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়ায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে ছোট আবুল কালাম রাজধানীর কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল নাদিমের ব্যক্তিগত গাড়ির চালক ছিলেন। ছেলের পুড়ে যাওয়ার কথা শুনে গতকাল দুপুরে গ্রামের বাড়ি বরিশাল থেকে ছুটে এসেছেন কালামের বৃদ্ধ মা সাফেয়া বেগম। ছেলের বিছানার পাশে বসে কাঁদছিলেন তিনি। কোথায় কী হয়েছে জানেন না। এই মা শুধু জানেন, অবরোধে তার ছেলের শরীরটা পুড়ে গেছে।পাশে বসা কালামের চাচাতো বোন জাহানারা বেগম জানান, মালিকের সঙ্গে রাতে মগবাজারে একটি কমিউনিটি সেন্টারে দাওয়াত খেতে যান। খাওয়া শেষে বাইরে গাড়িতে বসে মালিকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন কালাম। তখনই পেট্রোল বোমা ছোড়া হয় তার গাড়িতে। আগুন ধরে যায় কালামের শরীরেও।একই রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে যাত্রীবাহী বাসে দেওয়া আগুনে দগ্ধ হন কামরাঙ্গীরচরের একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন আবদুল গফুর ও খাদেম মিজানুর রহমান। গতকাল তারা চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শঙ্কর পাল সমকালকে জানান, হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন যশোরে দগ্ধ ট্রাকচালক মুরাদ মোল্লা, ময়মনসিংহের অটোরিকশা চালক সিদ্দিকুর রহমান, রাজধানীর কাজীপাড়ায় দগ্ধ তানজিমুল ইসলাম অয়ন ও তার মা শামসুন নাহার, ফেনীতে দগ্ধ স্কুলছাত্র অনিকসহ ছয়জন।
অমূল্য চন্দ্র এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। শুধু অমূল্য চন্দ্র নন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধের আগুনে পুড়ে তার মতো আরও ৬ জন বার্ন ইউনিটে ছটফট করছেন। দগ্ধ অমূল্য চন্দ্র আরও কয়েকজন রিকশা চালকের সঙ্গে ঢাকার অদূরে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় একটি মেসে থাকতেন। তাদেরই একজন অনিল চন্দ্র ওই বাসে ছিলেন।অনিল চন্দ্র জানান, অমূল্যসহ তারা ৫ জন একই একই এলাকার। অবরোধে কাজকর্ম কম হওয়ায় সবাই মিলে একসঙ্গে বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ জন্য সায়েদাবাদ থেকে গাবতলীগামী রুটে চলাচলকারী একটি বাসে ওঠেন তারা। বাসটি ফার্মগেটে তেজগাঁও মহিলা কলেজের অদূরে ফুট ওভারব্রিজের নিচে যেতেই হঠাৎ আগুন ধরে যায়। সবাই বেরিয়ে আসতে পারলেও আগুনে পুড়ে যান অমূল্য।অনিল চন্দ্র আরও জানান, স্ত্রী রত্না রানী, ৩ ছেলে, প্রতিবন্ধী ছোট ভাই ও বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে অমূল্যর সংসার। পঞ্চগড়ে কাজের অভাব। তাই বছর তিনেক আগে কাজের সন্ধানে স্বজনদের ছেড়ে ঢাকায় এসেছিলেন। বাড়ি যাওয়ার পথে দগ্ধ হয়ে তিনি এখন মৃত্যুপথযাত্রী। যে স্বজনদের কাছে যাচ্ছিলেন অমূল্য চন্দ্র; গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তার দগ্ধ হওয়ার খবরই পাননি তারা। মেসের বন্ধু অনিলসহ আরও কয়েক সহকর্মী হাসপাতালে তাকে দেখাশোনা করছেন বলে বার্ন ইউনিটের কর্মীরা জানান।বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা জানান, অমূল্য চন্দ্রের শরীরের ১২ ভাগ পুড়ে গেছে। আক্রান্ত হয়েছে শ্বাসনালীও, যা উদ্বেগজনক। আরও সময় না যেতে এখনই তার বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।অমূল্যের বিছানার অদূরেই পোড়া যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন শরীরে সাদা ব্যান্ডেজ মোড়ানো যুবক আবুল কালাম আজাদ। পেশায় তিনি প্রাইভেটকার চালক। শুক্রবার রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় প্রাইভেটকারের সঙ্গে পুড়েছে আজাদের শরীরের ৩৩ শতাংশ। রক্ষা হয়নি শ্বাসনালীও।আবুল কালামের গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়ায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে ছোট আবুল কালাম রাজধানীর কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল নাদিমের ব্যক্তিগত গাড়ির চালক ছিলেন। ছেলের পুড়ে যাওয়ার কথা শুনে গতকাল দুপুরে গ্রামের বাড়ি বরিশাল থেকে ছুটে এসেছেন কালামের বৃদ্ধ মা সাফেয়া বেগম। ছেলের বিছানার পাশে বসে কাঁদছিলেন তিনি। কোথায় কী হয়েছে জানেন না। এই মা শুধু জানেন, অবরোধে তার ছেলের শরীরটা পুড়ে গেছে।পাশে বসা কালামের চাচাতো বোন জাহানারা বেগম জানান, মালিকের সঙ্গে রাতে মগবাজারে একটি কমিউনিটি সেন্টারে দাওয়াত খেতে যান। খাওয়া শেষে বাইরে গাড়িতে বসে মালিকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন কালাম। তখনই পেট্রোল বোমা ছোড়া হয় তার গাড়িতে। আগুন ধরে যায় কালামের শরীরেও।একই রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে যাত্রীবাহী বাসে দেওয়া আগুনে দগ্ধ হন কামরাঙ্গীরচরের একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন আবদুল গফুর ও খাদেম মিজানুর রহমান। গতকাল তারা চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শঙ্কর পাল সমকালকে জানান, হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন যশোরে দগ্ধ ট্রাকচালক মুরাদ মোল্লা, ময়মনসিংহের অটোরিকশা চালক সিদ্দিকুর রহমান, রাজধানীর কাজীপাড়ায় দগ্ধ তানজিমুল ইসলাম অয়ন ও তার মা শামসুন নাহার, ফেনীতে দগ্ধ স্কুলছাত্র অনিকসহ ছয়জন।