ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারকে সম্প্রতি বৈরুতে হামলা চালিয়ে হত্যা করে ইসরায়েল বাহিনী। এর জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় হিজবুল্লাহ। সেইসঙ্গে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ না করলে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছিল হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী। এ নিয়ে সম্প্রতি উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় যে, লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ পুরো মাত্রায় শুরু হবে।
রোববার (২৫ আগস্ট) লেবাননের দক্ষিণানচলে ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। হিজবুল্লাহর আক্রমণ শুরুর আগেই ইসরায়েল একে 'আগাম হামলা' হিসেবে উল্লেখ করে। ইসরায়লের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, আত্মরক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে এসব হুমকি উৎখাতে আইডিএফ সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে। এরপরেই ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, গত কয়েক ঘণ্টায় ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ৩২০টির বেশি রকেট ছোড়া হয়েছে।
এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি দাবি করেছে, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চএল ১১টি সামরিক ঘাঁটিকে হামলা চালানো হয়েছে। হিজবুল্লাহ জানায়, তারা গতমাসে তাদের কমান্ডার ফুয়াদ শুকরের হত্যার বদলা নিতে ইসরায়েলের ওপর হামলা শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। আল জাজিরার লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়েছে। তেল আবিব থেকে সকল ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। নাগরিকদের ঘরের মধ্যে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
লেবাননে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
এমন পরিস্থিতিতে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে পুরো মাত্রার যুদ্ধ শুরু হলো কিনা- এনিয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়া খবর প্রকাশ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি লেবানন ও ইসরায়েলের এসব ঘটনার ওপর গভীর নজর রাখছেন। হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র শন স্যাভেট বলেছেন, আমরা ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করব এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য কাজ চালিয়ে যাবো। এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কাতস বলেছেন, ইসরায়েল পুরো মাত্রার যুদ্ধ চায় না। অন্যদিকে হিজবুল্লাহও বলেছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক আক্রমণের প্রথম ধাপ সমাপ্ত হয়েছে। গোষ্ঠীটি এসব হামলাকে সফল হিসেবে উল্লেখ করেছে। লেভান্ট ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সামি নাদের আল জাজিরাকে বলেছেন, ইসরায়েলি হামলায় পুরো অঞ্চলকে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে টেনে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস