আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবলের (আইএমএফ) শর্তের কারণে ২০২৫ সালের পর সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৭ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিতে পারবে না সরকার।
মূলত ঘাটতি বাজেট পূরণে অভ্যন্তরীণ ঋণের এক-চতুর্থাংশ নিতে হবে সঞ্চয়পত্র থেকে। পাশাপাশি গ্রাহকদের প্রদেয় মুনাফার ওপর আরও কর বৃদ্ধি এবং সুদ হার বাস্তবভিত্তিক করার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি। সংকট মোকাবিলায় ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার বিপরীতে আইএমএফ এসব শর্ত জুড়ে দিয়েছে।
এদিকে সংস্থাটি শর্ত দেওয়ার আগেই সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ কম নেওয়া ও সুদ হার কমানোর পরিকল্পনা করে রেখেছে। মধ্যমেয়াদি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা কাঠামোতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাত থেকে ২৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। যা চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার থেকে ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা কম। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩৪ হাজারর ৫০০ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়।
সঞ্চয়পত্র নিয়ে আইএমএফ’র রূপরেখা: চলতি অর্থবছর দেশের বাজেট ঘাটতি মোট জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। আইএমএফ’র প্রাক্কলন অনুযায়ী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ ঘাটতি কমে দাঁড়াবে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এই ঘাটতি কমানোর পেছনে নিয়ামক হিসাবে ধরা হয়েছে কর খাতে আয় বৃদ্ধি। সংস্থাটি হিসাব কষে বলেছে, ২০২৩-২০২৬ পর্যন্ত এই তিন অর্থবছরে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত কর রাজস্ব বাড়াতে হবে ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এই কর আদায় হলে ঘাটতি বাজেট জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসবে। আর ঘাটতি কমে আসলে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ঋণ নেওয়ার অঙ্কও কমবে। ওই সময় ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ ঋণের এক-চতুর্থাংশ নিতে হবে সঞ্চয়পত্র থেকে। অবশিষ্ট ঋণ নিতে হবে ব্যাংকিং খাত থেকে।
সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেশের বাজেট ঘাটতি দাঁড়াবে (৩ দশমিক ৩ শতাংশ হারে) ২ লাখ ৩ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা। এ ঘাটতি পূরণে ৭৪ শতাংশ ঋণ নেওয়া হবে অভ্যন্তরীণ খাত (ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র) থেকে। ফলে অভ্যন্তরীণ ঋণের অঙ্ক দাঁড়ায় ১ লাখ ৫০ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা। এর এক-চতুর্থাংশ অর্থাৎ ৩৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিতে পারবে না সঞ্চয়পত্র থেকে।
যদিও চলতি অর্থবছরে সরকার ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। ফলে শর্ত পূরণ করতে গিয়ে আগামী ৩ অর্থবছরে খুব বেশি বাড়বে না সঞ্চয়পত্র বিক্রি।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে আইএমএফ। এরই মধ্যে ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করেছে সংস্থাটি। এল এবাংলাটাইমস/এজেড
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে আইএমএফ। এরই মধ্যে ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করেছে সংস্থাটি। এল এবাংলাটাইমস/এজেড