আমেরিকা

কানাডা থেকে ফিরে আসার পর ব্যাখা ছাড়াই মার্কিন নাগরিক ও তার স্ত্রী আটক

একজন মার্কিন নাগরিক অভিযোগ করেছেন, কানাডা সফর শেষে দেশে ফেরার পথে তিনি এবং তার স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষীদের হাতে ব্যাখা ছাড়াই কয়েক ঘণ্টা আটক হন। বাচির আতাল্লা নামের ওই ব্যক্তি CNN-কে বলেন, তিনি এবং তার স্ত্রী জেসিকা রোববার সন্ধ্যায় কানাডায় পরিবারের সঙ্গে সপ্তাহান্তের ছুটি কাটিয়ে ফেরার পথে ভারমন্টের হাইগেট স্প্রিংস চেকপয়েন্টে মার্কিন কাস্টমস ও বর্ডার প্রোটেকশন (CBP) এজেন্টদের কাছে আটক হন। লেবানন বংশোদ্ভূত আতাল্লা জানান, তাদের গাড়ি একটি সাইড পজিশনে পার্ক করতে বলা হয় এবং চাবি হস্তান্তর করতে বলা হয়। যখন তিনি জানতে চান কেন, তখন এক অফিসার বন্দুকের দিকে হাত দিয়ে তাকে গাড়ি থেকে নামতে বলেন। পরে তাকে হ্যান্ডকাফ করে একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার ব্যক্তিগত জিনিসপত্র জব্দ করা হয়। তার স্ত্রীকেও আলাদা একটি কক্ষে রাখা হয়। "আমি যখন দেখলাম আমার স্ত্রীর চোখের মাসকারা কান্নায় গলে পড়ে গেছে, হৃদয়টা ভেঙে গিয়েছিল," বলেন আতাল্লা। "এটা কোনো মানবিক আচরণ ছিল না।" আটকের সময় CBP কর্মকর্তারা আতাল্লার ফোনের পাসকোড চেয়ে নেন, এবং তিনি সেটি দেন। তবে বহু অনুরোধ সত্ত্বেও তাদের কেন আটক করা হয়েছে, তা জানানো হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। এমনকি তাদের অধিকার সম্পর্কেও কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। CBP-এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "এই ভ্রমণকারীর অভিযোগ মিথ্যা এবং অতিরঞ্জিত। কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠিত নিয়ম অনুযায়ী কাজ করেছেন।" এদিকে হোয়াইট হাউসের একটি ব্যাপক বহিষ্কার অভিযানের জেরে সীমান্তে আগতদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনকি কিছু মার্কিন নাগরিককেও বিদেশি কারাগারে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন, যা বিশেষজ্ঞদের মতে, আইনি ভিত্তিহীন। আতাল্লা বলেন, “আমি সত্যিই আমার জীবনের জন্য আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম।” তিনি আরও জানান, দীর্ঘ সময় আটকের পর তিনি বুকে ব্যথা ও মাথা ঘোরা অনুভব করেন এবং অ্যাম্বুলেন্স ডাকার অনুরোধ জানান। CNN-এর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, রাত ৮টার দিকে জরুরি মেডিকেল সার্ভিস তাকে পরীক্ষা করে। CBP তখন জানায়, যদি তিনি হাসপাতালে যান, একজন অফিসার তার সঙ্গে যাবে এবং পরে আবার কক্ষে ফিরিয়ে আনা হবে এবং পুরো প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু হবে। তিনি তার স্ত্রীকে একা রেখে যেতে না চাওয়ায় হাসপাতালে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আতাল্লা বলেন, প্রথমে আটক হওয়ার সময় তিনি কর্মকর্তাদের বলেন যেন তার বোন সেলিন আতাল্লা, একজন অভিবাসন আইনজীবী, এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেলিন আতাল্লার ফোনে রাত ৯টার দিকে একজন নিজেকে CBP কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ভয়েসমেইল রেখে যান, যাতে বলা হয়, বাচির ও তার স্ত্রী "নিরাপদে" রয়েছেন এবং "আরও কিছুক্ষণ" সেখানে থাকবেন। সেলিন বলেন, “ও আমার সাহায্য চেয়েছিল, ও যে ঠিক আছে – এটা জানানোর জন্য নয়।” পরবর্তী সময়ে, আতাল্লা জানান, তারা রাত ১১টার দিকে ছাড়া পান। গাড়িতে উঠেই তারা আরবি ভাষায় বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, আমরা নিরাপদ।” বর্তমানে আতাল্লা লেবাননে পরিবারের সঙ্গে রয়েছেন। CNN-কে তিনি বলেন, "আমি আশঙ্কা করছি, এই ঘটনার কথা প্রকাশ করার জন্য তারা প্রতিশোধমূলক কিছু করতে পারে।"

এলএবাংলাটাইমস/ওএম